করোনা আবহের মধ্যেও চলতি আর্থিক বছরে ১৪ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতির পথে বাংলা
এই পর্বেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ আর্থিক অগ্রগতির আরও সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

করোনা পর্বের বিস্তর প্রতিকূলতার মধ্যেও চলতি আর্থিক বছরে (২০২১-২২) ১৪ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতির পথে হাঁটতে শুরু করেছে বাংলা। গত আর্থিক বছরের তুলনায় যা প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা বেশি হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। আর্থিক সংস্কার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিকল্পিত নানা সামাজিক পরিষেবার মধ্য দিয়ে সাধারণের হাতে নগদের জোগান বাড়ানোয় উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। সেই সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে কৃষি, ক্ষুদ্র-কুটির ও মাঝারি শিল্পের সূচক। এই দু’টি প্রধান কারণে অর্থনীতির অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই পর্বেই রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ আর্থিক অগ্রগতির আরও সহায়ক হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। করোনার চলতি ঢেউয়ে কোভিড প্রোটোকলের বিধি-নিষেধ আরোপ করা হলেও অর্থনীতিকে সচল রাখার উদ্যোগও নিয়েছেন মমতা। ভারত সরকারের মিনিস্ট্রি অব স্ট্যটিস্টিকস অ্যান্ড প্ল্যানিং ইমপ্লিমেনটেশন-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা নিয়ে বিস্তর ভোগান্তি ছিল ২০২০-২১ আর্থিক বছরেও। লকডাউনের মতো কড়াকড়ি প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে সে বছর। প্রতিবন্ধকতা ছিল আর্থিক কর্মকাণ্ডেও। তা সত্ত্বেও বাংলা পৌঁছেছে ১৩ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতিতে। বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল তার আগের আর্থিক বছরের (২০১৯-২০) তুলনায় এক লক্ষ কোটি টাকা বেশি। শুধু তাই নয়, এই পর্বে বিজেপি শাসিত হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, অসম এবং অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, বিহারের মতো রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি জিএসডিপি ছিল বাংলার।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাম জামানার শেষ পর্বে গত ২০১০-১১ আর্থিক বছরে রাজ্যের অর্থনীতি ছিল ৪.৬০ লক্ষ কোটি টাকার। সেই বছরই জিডিপি নির্ধারণের ‘বেস’-এ রদবদল ঘটানো হয়। তারপরও ২০১১-১২ আর্থিক বছরে বাংলা ৫.২ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতিতে পৌঁছে যায়। তারপর থেকে লাগাতার বৃদ্ধির পথে হেঁটে প্রাক কোভিড পর্বে (২০১৯-২০) ১২ লক্ষ কোটি টাকার (রিভাইজড এস্টিমেট) অর্থনৈতিক মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলে বাংলা। এর পরের আর্থিক বছরে (২০২০-২১) একাধারে রাজ্যকে যেমন করোনার মোকাবিলা করতে হয়েছে, তেমনই সামলাতে হয়েছে উম-পুন ও যশের মতো দুই বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়ও। তার সঙ্গে কিন্তু চালু থেকেছে দৈনন্দিন আর্থিক কাজকর্ম। এরই সুফল মেলে আর্থিক বছরের শেষে। প্রভিশনাল এস্টিমেট অনুযায়ী, সেবার বাংলা পৌঁছে গিয়েছিল ১৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি অর্থনীতিতে। এবার জিএসডিপির সেই পরিমাণ ছাড়িয়ে যাওয়াই মূল লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের।