চার বছরে কলকাতায় সবচেয়ে দূষণ কম ২০১৯-এ
আশার আলো দেখাচ্ছে শহরের ‘মুক্ত’ আকাশ। পরিসংখ্যান বলছে, গত চার বছরের মধ্যে ২০১৯-এই কলকাতার বাতাসের গড় দূষণমাত্রা ছিল সবচেয়ে কম। পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-এ কলকাতার বাতাসে অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম ২.৫) গড় মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৫০ মাইক্রোগ্রামের একটু বেশি। আর ভাসমান ধূলিকণার মাত্রা ছিল প্রতি ঘনমিটারে ১০০-এর কাছাকাছি। দু’টিই তার আগের তিন বছরের তুলনায় বেশ খানিকটা কম।
এই তথ্যই উৎসাহ জোগাচ্ছে পর্ষদের আধিকারিকদের। কারণ, ২০১৮-তে বিশেষ করে শীতের সময় দূষণে অনেক দিনই দিল্লিকে টেক্কা দিয়েছিল কলকাতা। প্রশ্ন উঠছিল, তা হলে কি কলকাতা দিল্লিকে ছাপিয়েই যাবে? পরিবেশকর্মী থেকে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে গত বছর শুরু থেকেই এই পরিস্থিতি বদলাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে পরিবেশ দপ্তর ও পর্ষদ। তাতে যে কিছুটা সুফল মিলেছে, তা পরিষ্কার হল পরিসংখ্যানেই।
অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণাকেই শরীরের পক্ষে বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। কারণ, এই ধরনের কণা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে মানব শরীরে নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি করে। দু’টির মাত্রাই অনেকটা কমায় পর্ষদ কর্তারা নতুন বছরে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান। চলতি শীতের মরশুমের শুরু থেকেই শহরের দূষণ চিত্রে বদলটা ধরা পড়ছিল। গত নভেম্বরে শহরের বাতাসে পিএম-১০ এর গড় মাত্রা ছিল ১২০-এর কাছাকাছি। ২০১৮-তে তা প্রায় ১৯০ ছুঁয়ে ফেলেছিল। পিএম-২.৫ এর মাত্রা এই দু’বছর ছিল যথাক্রমে ১২০ ও ৭০।
গত ডিসেম্বরে কলকাতায় বাতাসে পিএম-২.৫ এর গড় মাত্রা কমে ৪০-এর আশপাশে দাঁড়িয়েছিল। নিয়মিত কলকাতা ও আশপাশের বিভিন্ন পুর এলাকায় ৪০টি ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার থেকে দিনে দু’বার করে জল ছেটানোর ব্যবস্থা হয়েছে। তাতে রাস্তার ধুলো ওড়ার মাত্রা কমেছে। রাস্তার ধারের হোটেলে কাঠকয়লার উনুনের বদলে গ্যাস ওভেন দেওয়ার কাজ চলছে। নির্মাণ শিল্পের দূষণ ঠেকানোর পাশাপাশি চেহারা বদলেছে ধাপার বর্জ্য পাহাড়েরও।