মায়ের মৃত্যুর খবর, তবু কর্তব্যে অবিচল
ফোনে মায়ের মৃত্যুর খবর, তবু কর্তব্যে অবিচল ! অন্য মরদেহ বইলেন হাওড়ার শববাহী গাড়ির চালক। মা মারা গিয়েছেন, তবু নিজের কাজ ছেড়ে গেলেন না…
অস্থির, অসহিষ্ণু এই সময়ে কর্তব্যবোধ এবং মানবিকতার অনন্য নজির তৈরি করলেন হাওড়ার নরসিংহ দত্ত রোডের বাসিন্দা শঙ্কর পাছাল। পেশায় তিনি শববাহী যানের চালক। নিজের মায়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়েও অবিচল থাকলেন কর্তব্যে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব রেলের অর্থোপেডিক হাসপাতালে মৃত্যু হয় হাওড়া স্টেশনের রেল কর্মী চিন্ময় রায়ের। মৃতের পরিবারের ডাক পেয়ে মরদেহ বেলগাছিয়ার বাড়ি হয়ে বাঁধাঘাট শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কাজ করছিলেন শঙ্করবাবু। মৃতদেহ নিয়ে বেলগাছিয়ায় চিন্ময়বাবুর বাড়ি পৌঁছেছেন সবে, দেহ গাড়ি থেকে নামিয়ে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যেতে সাহায্য করছেন, আচমকাই বেজে উঠল শঙ্করবাবুর মোবাইল, বাড়ি থেকে ফোন আসছে, ফোন কেটে দিয়ে কাজেই ব্যস্ত থাকলেন ।
মরদেহ ঘরে ঢুকিয়ে বাড়িতে ফোন করলেন শঙ্কর বাবু। চিন্ময় বাবুর পরিজনদের কান্নাকাটির মধ্যেই শুনতে পেলেন নিজের মাতৃবিয়োগের খবর । প্রথমে ভেঙে পড়লেও নিজেকে সামলে নিলেন শঙ্কর বাবু, ফোনের ওপ্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে জানালেন, তিনি নিজের কাজ শেষ করে তবেই বড়ি ফিরবেন। যতক্ষণ না বাড়ি ফিরছেন, মায়ের দেহ যেন বাড়িতেই রাখা থাকে।
মৃত চিন্ময় রায়ের আত্মীয় পরিজনেরা শঙ্কর পাছালকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। কিন্তু তিনি রাজি হন না। বরং বলেন, আমি যখন দেহ গাড়িতে তুলেছি, তখন শ্মশান পর্যন্ত পোঁছে দিয়েই যাব। আমার মতো আপনাদেরও এখন খারাপ সময় । এমন সময়ে আপনারা নতুন করে সমস্যায় পড়ুন, চাই না।’ কথামতই, বাঁধাঘাট শ্মশানে দেহ নামিয়ে বাড়িতে ফিরলেন শববাহী যানের চালক চিন্ময় পাছাল।