এক মিনিটেই আঁকেন নেতাজির নিখুঁত ছবি, বাংলার বিস্ময় বিশ্বনাথ
তিনি বাঙালির আইকন। জাতীয়তাবোধ, মাথা উঁচু করার প্রতীক। তেইশে জানুয়ারি নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে দেশ জুড়ে নানা আয়োজন। এসবের মাঝে সুভাষচন্দ্র বোসকে নীরবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন এক শিল্পী। মাত্র এক মিনিটেই নেতাজির মুখাবয়ব দেওয়ালে আঁকতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তিনি কুলটির বেজডিহি গ্রামের বিশ্বনাথ বাউরি।
নেতাজির নাম উচ্চারণ হলেই তাঁর সামরিক পোশাক-টুপি আর চশমার পেটেন্ট ছবি যেন সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সেই চেনা ছবিটি তুলির টানে মুহূর্তের মধ্যে দেওয়ালে দেওয়ালে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করতে পারেন বিশ্বনাথ। শুধু শখে নয়, ফরমায়েশি আঁকাও আঁকেন তিনি। নেতাজি আঁকার আবদার রাখতে মাঝে-মধ্যে পাড়ি দেন ভিনরাজ্যেও। শুধু সুভাষ বোসের ছবি আঁকতে আঁকতে নেতাজির অনুগামী হয়ে উঠেছেন অখ্যাত এই শিল্পী। বিশ্বনাথ শুধু নেতাজির ছবিই আঁকেন না, সুভাষ বোসের তিনি একজন বড় অনুগামীও। নেতাজির জন্মদিনে পাড়ায় জাতীয় পতাকা তোলেন। পাড়ার কচিকাঁচাদের সামনে নেতাজি জীবনী নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বাইরে থেকে কেউ কাজের বায়না নিয়ে এলে ‘নেতাজি স্পেশ্যাল বিশ্বনাথ’ নামেই খোঁজ নেন। তবেই চিনতে পারেন স্থানীয়রা।
দুবছর আগে পর্যন্ত বিশ্বনাথের আঁকা নেতাজির ছবির মূল্য ছিল ৩০ টাকা। চাহিদা হু হু করে বাড়ায় গত বছর সেই দাম দ্বিগুণ হয়ে ঠেকেছে এবার ৬০ টাকায়। একটি ৬ ফুট বাই ৭ ফুটের দেওয়ালে দেড় মিনিটে নেতাজি আঁকার কৃতিত্ব রয়েছে বিশ্বনাথের হাতে। তুলির আঁচড় শুরু হতে হতেই শেষ। একেবারে ম্যাজিক। সাদা দেওয়াল থেকে চোখের নিমেষে হয়ে যায় সামরিক বেশে নেতাজির মুখের রঙিন অবয়ব। ২৩ শে জানুয়ারির আগেই গোটা কুলটি, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জুড়ে দেওয়ালে দেওয়ালে নেতাজি ও দেওয়াল লিখন সেরে ফেলার গুরুদায়িত্ব ছিল বিশ্বনাথের কাঁধে। কোথাও লিখেছেন জয়তু নেতাজি, কোথাও অখণ্ড ভারতের নানা স্লোগান। এই বিশেষ কীর্তির জন্য পুরস্কৃতও করা হয়েছে তাঁকে।