কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

করোনার বিরুদ্ধে প্রাচীর কলকাতার মিশেল

April 1, 2020 | 2 min read

আজ বিশ্ব যে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে, সেখানে দাঁড়িয়ে সকলের ভালো থাকা ছাড়া আর কি বা চাওয়ার থাকতে পারে। সন্তানদের নিয়ে উদ্বিগ্ন নন, এমন মা বোধহয় পৃথিবীতে বিরল। ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’… প্রবাদটা খুবই পরিচিত, এবার দেখা গেলো তার প্রতিফলন। 

মিশেল হ্যারিসন বয়স ৭৭। তিনি মা আবার চিকিৎসকও। মেয়েদের নিয়ে চিন্তিত তিনিও। করোনাভাইরাস নিয়ে তিনি বিচলিত। জানেন না এই ভাইরাসের উৎস কী, এর বিস্তার..কতটাই বা মারাত্মক হতে পারে। কিন্তু এটুকু বুঝেছেন দুর্বল, অসুস্থ এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের প্রকোপ ঝুঁকিপূর্ণ।

১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের জনপ্রিয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মিশেল একজন পর্যটক হিসেবেই ভারত ভ্রমণে এসেছিলেন। এখানে এসে বেশ কিছু অনাথ আশ্রমে গিয়েছিলেন তিনি। ঘুরতে গিয়ে সেখানেই এক ফুটফুটে কন্যার মায়ার বাঁধনে বাঁধা পড়েন তিনি। খাতায় কলমে সেই শিশুকন্যাকে দত্তক নিয়ে ফিরে যান নিজের দেশে। কিন্তু মন পড়ে থাকে এখানকার ঘিঞ্জি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোনওক্রমে টিকে থাকা বাচ্চাগুলোর দিকে। ধুঁকতে ধুঁকতে চলা অনাথ আশ্রমগুলোর দিকে। ২০০২ সালে পাকাপাকি ভাবে নিজের দেশ ছেড়ে চলে আসেন কলকাতায়। দত্তক নেন বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন ১৩ শিশুকন্যাকে। এছাড়াও তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। এঁদের সবাইকে নিয়েই মিশেলের পরিবার,স দস্য সংখ্যা ২০। ২০০৬ সালে নিউ আলিপুরের বাড়িতে তৈরি হয় ‘শিশুর সেবায়’। 

সেই অসুস্থ মেয়েরা মাতৃস্নেহে যেমন সুস্থ হয়ে উঠেছে তেমনই পড়াশুনো শিখছে। এবছরই দুজন বোর্ডের পরীক্ষা দিয়েছে। এছাড়াও নিজ গুণে সকলে পারদর্শী। তাদের জন্য নিয়মিত থাকে থেরাপির ক্লাস, দুই মেয়ের জন্য ব্যবস্থা করেছেন আই ট্র্যাকারেরও। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাড়িতেই চলছে ক্লাস। অনলাইনেই ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যবস্থা রয়েছে মাস্ক আর হ্যান্ড স্যানিটাইজারেরও। এছাড়াও তিনি উদ্বিগ্ন কলকাতার হোমগুলির পরিবেশ নিয়েও।

যেভাবে বাইরের দেশ থেকে ফিরে ভাইরাস আক্রান্ত হওয়া সত্বেও তা চেপে যাচ্ছে এখানকার শিক্ষিত নাগরিকেরা, তা দেখে মিশেল হতবাক। দেশ জুড়েই চলছে লকডাউন। তাঁর মেয়েদের তিনি সবসময় বোঝান,’শিশুর সেবায় মেয়েদের বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে। তাদের বেঁচে থাকার শক্তি দেবে। খুব সীমিত ক্ষমতা নিয়েই তিনি তাদের মানুষ করছেন’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#michelle harrison, #Coronavirus

আরো দেখুন