পেটপুজো বিভাগে ফিরে যান

লকডাউন নাগপাশ ঝেড়ে পরিষেবায় প্রস্তুত রেস্তোরাঁ

June 1, 2020 | 3 min read

দীর্ঘ লকডাউনের পর ৮ জুন থেকে মল এবং অন্যান্য জায়গায় রেস্তোরাঁ খোলায় অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য। তবে, কন্টেনমেন্ট জোনে খোলা যাবে না। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে দেশের রেস্তোরাঁগুলির সংগঠন ন্যাশনাল রেস্টুরেন্টস অ্যাসোসিসেয়শন অফ ইন্ডিয়া। অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায় অবশ্য আগে থেকেই নতুন আঙ্গিকে ব্যবসা শুরু করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে শহরের রেস্তোরাঁগুলি। যেমন, সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে গ্রাহকদের বসার আসন সংখ্যা অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া; কর্মী এবং গ্রাহকদের থার্মাল স্ক্রিনিং ও স্যানিটাইজার রাখা; কন্ট্যাক্টলেস অর্ডারিং ও কিউআর কোড-ভিত্তিক অর্ডার নেওয়া; রেস্তোরাঁর কর্মীদের গ্লাভস, মাস্ক এবং ক্যাপ পরা এবং তা একবার ব্যবহারের পর নষ্ট করে দেওয়া, সব ব্যবস্থাই করা রয়েছে।

অনলাইন অর্ডার ডেলিভারির সময় গ্রাহকদের অ্যালকোহল যুক্ত স্যানিটাইজারের পাউচ দিচ্ছে চাউম্যান, অউধ ১৫৯০ এবং চ্যাপ্টার ২। বাজার থেকে গাড়ি আসার পর শাক-সবজি, মাছ-মাংস নতুন ক্রেটে ঢেলে ধোওয়া এবং তারপর ফের তা গরম জলে ধুয়ে তবেই রান্নাঘরে তোলা হচ্ছে। আলাদা আলাদা পাউচে সেই সমস্ত সামগ্রী রেখে দেওয়া হচ্ছে। অর্ডার অনুযায়ী বের করে রান্না করে ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, জানান সংস্থার দুই কর্ণধার শিলাদিত্য এবং দেবাদিত্য চৌধুরি।

রং দে বসন্তী ধাবা আবার প্রতি ১০ মিনিট অন্তর গ্রাহকদের সচেতন রাখতে ঘোষণা করছে। পরিচালক সংস্থা জিং রেস্টুরেন্টের চিফ অপারেটিং অফিসার তপন সিনহা বলেন, ‘চিন, হংকং যেমন করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে গোটা রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছে, আমাদেরও সেই একই পথে হাঁটতে হবে। রেস্তোরাঁয় ঢোকার আগে গ্রাহক ও কর্মীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা, প্রতি চার ঘণ্টা অন্তর রেস্তোরাঁ স্যানিটাইজ করা, অগ্রিম টেবিল বুকিংয়ের ব্যবস্থা, স্ক্যান কোডের মাধ্যমে অনলাইন মেনু বাছাইয়ের সুবিধা, প্রভৃতি শুরু করা হচ্ছে।’ গ্রাহকদের মাস্ক রাখার জন্য আলাদা ব্যাগেরও বন্দোবস্ত করছে রং দে বসন্তী ধাবা। প্রতি টেবিলে স্যানিটাইজার বোতল, কর্মীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ডক্টর-অন-কল, কন্ট্যাক্টলেস প্রযুক্তির ব্যবহার, ক্যাশলেস ট্রানজাকশনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তপন জানান, ‘হ্যাজার্ড অ্যানালিসিস অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কন্ট্রোল পয়েন্টস (এইচএসিসিপি) এবং ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার শংসাপত্র প্রাপ্ত সরবরাহকারীদের কাছ থেকেই শুধুমাত্র পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তপন জানান। গ্রাহকদের ভয় দূর করতে রেস্তোরাঁয় শংসাপত্রের কপি রাখার সিদ্ধান্তও নিয়েছে রং দে বসন্তী ধাবা।

লকডাউন নাগপাশ ঝেড়ে পরিষেবায় প্রস্তুত রেস্তোরাঁ

হোয়াটসঅ্যাপ কাফের পার্টনার অনির্বাণ সেনগুপ্তের কথায়, ‘গ্রাহকদের পাশাপাশি কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্যানিটাইজড চ্যানেলের মধ্যে দিয়ে গ্রাহক ও কর্মীদের ঢোকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ছয় স্তর বিশিষ্ট মাস্ক এবং গ্লাভসের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় রেখে টেবিল-চেয়ার পাতা এমনকি রান্নাঘরে কর্মীদের মধ্যেও পর্যাপ্ত দূরত্ব রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর বাইরে রাজ্য সরকার এ বিষয়ে বিশেষ কোনও নির্দেশিকা দিলে তা পালন করা হবে।’

তবে, শুধু রেস্তোরাঁ খোলার অনুমতিতে কোনও লাভ দেখছেন না হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট অ্যাসোসিয়েশনস অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার প্রাক্তন সভাপতি রাকেশ মিশ্র। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘যাদের রেস্তোরাঁর সঙ্গে বার রয়েছে তাদের শুধুমাত্র রেস্তোরাঁ খোলার অনুমতি পেয়ে কোনও লাভ নেই। কারণ, এই রেস্তোরাঁগুলিতে যে সমস্ত গ্রাহক আসেন তাঁদের প্রায় ৭০ শতাংশই রেস্তোরাঁ এবং বার দুইয়ের জন্যই আসেন। কাজেই আমাদের সেই গ্রাহকরা আসবেন কি না সন্দেহ রয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে কেএফসির চিফ মার্কেটিং অফিসার মোক্ষ চোপড়া বলেন, ‘সীমিত সংখ্যক খাবার নিয়ে আমাদের পরিষেবা শুরু করছি। সামাজিক ব্যবধান বজায় রাখার জন্য রেস্তোরাঁর নক্সা বদলানো হয়েছে। প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর তা স্যানিটাইজেশন করা হবে। কর্মী এবং ক্রেতা ও ডেলিভারি রাইডারদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে রেস্তোরাঁর মাটিতে স্টিকার লাগানো হয়েছে।’

কোয়েস্ট এবং সাউথ সিটির মতো মলে ট্যাকো বেল-এর রেস্তোরাঁ রয়েছে। ভারতে ট্যাকো বেল-এর মাস্টার ফ্র্যাঞ্চাইজি পার্টনার বর্মন হসপিট্যালিটির মনদীপ সিং শেঠির (ভাইস প্রেসিডেন্ট, অপারেশনস) কথায়, ‘রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার পাশাপাশি খাবার ডেলিভারি দেওয়া এবং বাড়িতে খাবার নিয়ে গিয়ে খাওয়ার উপর জোর দেওয়া হবে। কার্ড বা ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় পেমেন্টের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

তথ্যসূত্র: সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় , এই সময়

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Restaurant, #lock down

আরো দেখুন