বুধবার থেকে আনলক ২ নয়া নির্দেশিকা দিল কেন্দ্র
শুধু কন্টেইনমেন্ট জোনেই থাকবে লকডাউন। বাকি দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্বিতীয় দফার আনলক পর্ব শুরু করা যেতে পারে। সোমবার রাতে নির্দেশিকা জারি করে এমনটাই জানাল কেন্দ্র। জানিয়ে দিল, কন্টেইনমেন্ট জোনের বাইরে পরিস্থিতি বিচার করে জীবন-জীবিকায় আরও ছাড় দিতে পারে রাজ্যগুলি। তবে, ৩১ জুলাই পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকছে। একই সঙ্গে বন্ধ থাকছে বার, জিম, বিনোদন পার্কগুলিও। আজ, মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এদিকে, মহারাষ্ট্রে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে উদ্ধব থ্যাকারে সরকার। করোনা সংক্রমণে দেশওয়াড়ি তালিকায় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে মারাঠাভূমি। আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লক্ষ ছাড়িয়েছে কিছুদিন আগে। মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে সাত হাজার ছুঁইছুঁই। এই অবস্থায় পুরো জুলাই মাস লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশিকা জারি করেছে উদ্ধব সরকার। আরও বলা হয়েছে, মুম্বই মেট্রোপলিটন অঞ্চলে অত্যাবশ্যকীয় কাজ বাদে কোনও কিছুর জন্য এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। মাস্ক পরা, দূরত্ববিধি বজায় রাখা ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধির দিকে বাধ্যতামূলকভাবে খেয়াল রাখতে হবে। একমাত্র কর্মস্থলে যাওয়া ও জরুরি পরিষেবা ছাড়া অবাধ গতিবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ জারি থাকবে।
তবে অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর সব দোকান, ই-কমার্স, খাবারের হোম ডেলিভারি ও শিল্পক্ষেত্রগুলি আগের মতোই চালু রাখা যাবে। জরুরি পরিষেবা বাদে সরকারি দপ্তরগুলি সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ কর্মী নিয়ে চলবে। মুম্বই মেট্রোপলিটন অঞ্চলে বেসরকারি দপ্তরগুলিকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চালাতে হবে। জেলাগুলির মধ্যে বাস চলবে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ আসনে যাত্রী নিয়ে। এর মধ্যেই এদিন রাজ্যে প্লাজমা থেরাপির মেগা প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্ল্যাটিনা’। মেডিক্যাল শিক্ষাদপ্তরের এক কর্তার দাবি, প্লাজমা থেরাপির ক্ষেত্রে এটি বিশ্বের বৃহত্তম প্রকল্প। এর আওতায় ১৭টি মেডিক্যাল কলেজে ৫০০ জন গুরুতর করোনা রোগীর প্লাজমা থেরাপি করা সম্ভব।
অসমের গুয়াহাটিতে রবিবার সন্ধ্যার পর থেকেই ১৪ দিনের লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। নাগাল্যান্ডে ১৫ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন চলবে। অন্যদিকে, তামিলনাড়ুও ৩১ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়েছে। সংক্রমণে রাশ টানতে ইতিমধ্যেই দিল্লি, গোয়া ও ওড়িশায় শুরু হয়েছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ। এবার সেই দলে নাম লেখাল মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশ। এই দুই রাজ্যও ঘোষণা করল, বাড়ি বাড়ি গিয়ে উপসর্গ থাকা মানুষকে চিহ্নিত করা হবে। পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। যদিও দেশজুড়ে সংক্রমণের গতিকে এখনও লাগাম নেই। এদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৫৯ জন। ফলে যে কোনও মূহূর্তে দেশে মোট সংক্রামিতের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লক্ষ ছাপিয়ে যেতে পারে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৩৮০ জন। দেশে মোট মৃতের সংখ্যা সাড়ে ১৬ হাজার ছুঁইছুঁই। বর্তমানে সক্রিয় আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ১০ হাজার ১২০। তবে আরও বেড়েছে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যা। দেশে সুস্থতার হার এখন প্রায় ৫৮.৬৭ শতাংশ। এদিকে, এদিন কর্ণাটকের মেডিক্যাল শিক্ষামন্ত্রী কে সুধাকর জানিয়েছেন, রাজ্যের মোট আক্রান্তের ২৫.৯২ শতাংশই রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। গত ২৩ জুন সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৫৬ জন। ২৮ জুনের মধ্যে তা দ্বিগুণের বেশি বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৪১৯ জন। তবে রাজ্যে মৃত্যুর হার ১.৫৬ শতাংশ। জাতীয় গড় ৩ শতাংশের থেকে অনেকটাই কম।