স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

কপিক্যাট সুইসাইড – আপনার সন্তানও এদিকে ঝুঁকছে না তো? 

July 7, 2020 | 2 min read

সম্প্রতি তরুণ অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার খবরে গোটা দেশ স্তম্ভিত হয়ে যায়। এই ঘটনায় দেশের মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়ে পড়ে। এই ঘটনার কিছুদিন পরেই নয়াগাও-এর আদর্শ নগরের এক ১৬ বছরের কিশোরের আত্মহত্যার খবর প্রকাশিত হয়। জানা যায় তার প্রিয় অভিনেতার মৃত্যুতে অবসাদগ্রস্ত হয়েই সে এই সিদ্ধান্ত নেয়।

আমাদের দেশে ১৩-১৯ বর্ষীয় ছেলেমেয়েদের মৃত্যুর প্রধান কারণই আত্মহত্যা। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তারা তারা অনেকটাই বেশি আবেগপ্রবণ। অতীতেও এরকম ঘটনার নজির রয়েছে। অন্য কারো আত্মহত্যার খবর শুনে অবসাদগ্রস্থ হয়ে যদি কেউ আত্মহত্যা করে সেই ঘটনাকে ‘কপি ক্যাট সুইসাইড’ বলে।

কেন হয় এরকম ঘটনা?

শীর্ষস্থানীয় সেলিব্রিটির  চাঞ্চল্যকর আত্মহত্যার খবর সংবেদনশীল ব্যক্তিদের প্রায়শই ট্রিগার করতে পারে। তারা মনে করে যে যদি এত বড় সেলিব্রিটিরা চাপ সামালাতে না পারে তবে তারা কীভাবে পারবে। 

প্রায়শই  মানসিক চাপ, নিউরোবায়োলজি পরিবর্তন, পরিবারের সমর্থন না পাওয়া, বাড়ির অশান্তি এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও এইসব ঘটনাকে ত্বরান্বিত করে। খবরের চ্যানেলগুলির আত্মহত্যাকে গৌরবানিত্ব করাও এসব ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে।

কারা এর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে?

যেসব কিশোর-কিশোরীরা মাদকাশক্ত, পারিবারিক হিংসার শিকার, পরিবারের ভাঙ্গনের শিকার এবং প্রযুক্তি-সামাজিক মাধ্যমে বেশি আশক্ত, তাদের এই ‘কপিক্যাট সুইসাইড’-এর দিকে ঝোঁকার প্রবণতা বেশি থাকে।

কি করে বুঝবেন আপনার সন্তানেরও সেরকম আশঙ্কা আছে কি না!

  • যদি তার মধ্যে কোন অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখেন, যা কৈশরে হওয়া পরিবর্তন গুলি থেকে আলাদা।
  • যদি দেখেন আপনার সন্তানটি গরমের দিনেও লম্বা হাতা জামা পড়ছে, তাহলে এটা হতেই পারে তারা নিজেদের ক্ষতি করছে এবং সেটা লুকোতে চাইছে।
  • যদি সবসময় চোখ লাল হয়ে থাকে এবং গা থেকে দুর্গন্ধ বেরোয় তাহলে মাদক সেবনের সম্ভবনাও থাকতে পারে।
  • পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব থেকে নিজেকে যদি গুটিয়ে নেয় বা নিজের পছন্দের জিনিস দিয়ে দেওয়া বা সোস্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া আশঙ্কার কারণ।
  • মন খারাপ, অকারণে কান্নাকাটি, খাদ্যাভ্যাস এবং ঘুমে বদল বা পরীক্ষার নম্বর কমে যাওয়াও দুশ্চিন্তার বিষয়।
  • যদি সে মৃত্যুর কথা বলে তাহলেও তা ভীষণ গুরুত্ব দিয়ে দেখুন।

আত্মহত্যা নিয়ে কিভাবে আপনার সন্তানের সাথে কথা বলবে? 

সরাসরি কথা বলুন। আত্মহত্যা নিয়ে কথা বললেই সেটা সে করে ফেলবে না। বরং সে সহজ হবে এবং নিজের অবসাদের কথা বলতে পারবে। তাকে জিজ্ঞেস করুন আপনি কি তাকে কোন ভাবে সাহায্য করতে পারেন বা সেকি কোন বিশেষজ্ঞের সাহায্য চায়! দোষারোপ না করে তাকে বোঝান আপনারা তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

কিশোর সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো করার জন্যে কি করবেন?

বিষয়টি নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন। কেউ সর্দি কাশি নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে আমরা যেমন তাদের বিচার করি না ঠিক সেরকমই মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে কেউ বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হলে বিচার করবেন না। এটা খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। আপনার সন্তানের সাথে সরাসরি কথা বলাই একমাত্র পথ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#child, #suicides

আরো দেখুন