জেলা স্তরে রদবদল, সংশয় তৃণমূলের অন্দরে
তৃণমূলে সর্বস্তরে সাংগঠনিক রদবদলের প্রভাব জেলাগুলিতে কী ভাবে পড়বে তা নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল বৃহস্পতিবারই। রদবদলের ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। শুক্রবার একাধিক জেলায় নিজেদের মধ্যে ঘরোয়া ভাবে আলোচনা করেছেন নেতারা। তাতে ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, নদিয়ার মতো কয়েকটি জেলায় সভাপতি বদলের সম্ভাব্য পরিণাম কতটা ইতিবাচক হবে তা নিয়ে সংশয়ের কথাও শোনা গিয়েছে। একইভাবে পর্যবেক্ষকদের সরিয়ে দেওয়া নিয়ে গুঞ্জন চলছে। তবে তা ততটা নেতিবাচক চেহারা নেয়নি। দলের একাংশের মতে, ভোটকুশলী পিকে’র পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ মেনেই এই সিদ্ধান্ত।
ভোটের মুখে দলের সাংগঠনিক রদবদেলর বেশি কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েই তৃণমূলের অন্দরে সংশয় তৈরি হয়েছে। কয়েকটি জেলায় যাঁদের সামনে রেখে এই রদবদল হয়েছে, প্রশ্ন রয়েছে তাঁদের নিয়ে। আবার কোথাও কোথাও মুখবদলের পিছনে ভাবনা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে নীচেরতলার নেতাকর্মীদের মধ্যে। তবে ভোটের মুখে এই রদবদল সব থেকে বেশি গুঞ্জন তৈরি করেছে দক্ষিণ দিনাজপুর, নদিয়া, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়ায়।
কংগ্রেস থেকে আসা বিধায়ক গৌতম দাস সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুরে দলের একাংশের মধ্যে। আবার সাংগঠনিক সুবিধার জন্য লোকসভা কেন্দ্র ভিত্তিক সংগঠনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার এক বছরের মধ্যে পুরনো ব্যবস্থা ফিরিয়ে দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে নদিয়া জেলা দলের অন্দরে। কৃষ্ণনগরের সভাপতি হিসেবে মহুয়া মৈত্রকে নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষ ছিলই। এবারের রদবদলে তাঁকে গোটা জেলার দায়িত্ব দেওয়ার পর তা আরও বেড়ে গিয়েছে। শুক্রবারই জেলায় তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত বিধায়কেরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন।
বাঁকুড়ার সভাপতি বাছাই নিয়ে জেলা তৃণমূলের একাংশেই প্রশ্ন রয়েছে। লোকসভা ভোটে পরাজিত শ্যামল সাঁতরাকে মাসকয়েক আগে সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকেই আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কোন ভাবনা থেকে এই সিদ্ধান্ত তা জেলার নেতাদের কাছে। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘জেলাওয়াড়ি পর্যালোচনা করেই দলের সব অংশের মধ্যে সমন্বয়ের লক্ষ্যে এই রদববদল হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, মহিলা, ছাত্র, চিকিৎসক ও আইনজীবী সংগঠনেও রদবদল করতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাত্র সংগঠনে বদল নিয়ে আগেও কথা হয়েছে। এবার মহিলা শাখায় নবীন মুখ চাইছে দল। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা মাথায় রেখে এই সংগঠনকেও সাজতে চাইছে তারা। একই ভাবনা থেকে আইনজীবী সংগঠনকে নতুন করে সাজিয়ে সমাজে তাঁদের প্রভাবকে কাজে লাগাতে শাখা সংগঠনেও রদবদল চাইছে তৃণমূল।