জয়েন্ট, নিট পরীক্ষা পেছাতে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট
লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ভ্যাকসিন এখনও পরীক্ষাস্তরে। কিন্তু তা বলে সব কিছু অনন্তকাল থমকে থাকতে পারে না। ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ার তো নয়ই! সোমবার এই যুক্তিতেই পরীক্ষা পিছনোর আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আর তারপরই ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) জানিয়ে দিল, সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত দিনেই হবে জয়েন্ট (মেইন) এবং নিট (ইউজি)। করোনা পরিস্থিতিতে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নেবে তারা। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী ১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জয়েন্ট (মেইন) এবং ১৩ তারিখ মেডিক্যালের প্রবেশিকা নিট (ইউজি) হবে। চলতি বছরে জয়েন্ট (মেন)-এর জন্য ১১ লক্ষেরও বেশি এবং নিটে (ইউজি)র জন্য প্রায় ১৬ লক্ষ পরীক্ষার্থী নাম নথিভুক্ত করেছে। পশ্চিমবঙ্গ থেকেই এবছর নিটে রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৭৪ হাজার ৪৫২ জন। গতবারের থেকে প্রায় ৮ হাজার বেশি। প্রথমে এপ্রিল-মে মাসে দু’টি পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরে তা পিছিয়ে জুলাই মাসে নিয়ে যায় কেন্দ্র। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় বদলে যায় সেই সূচিও।
সংক্রামক করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষাগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেই সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন কয়েকজন পড়ুয়া। ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সেই ‘সায়ন্তন বিশ্বাস বনাম এনটিএ’ মামলা খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি অরুণ মিশ্র, বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারীর বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, করোনার জন্য অনন্তকাল সব কিছু থমকে রাখা যায় না। তাছাড়া আইনজীবীরা যদি আগের মতো আদালতে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে শুনানির জন্য আগ্রহী হতে পারেন, তাহলে পরীক্ষাই বা নয় কেন? এনটিএ’র পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও শীর্ষ আদালতে জানান, উপযুক্ত ব্যবস্থাতেই পরীক্ষা হবে।
আবেদনকারীর আইনজীবী আলাখ অলোক শ্রীবাস্তব অবশ্য পাল্টা সওয়াল করেন, অনন্তকাল নয়, যে হারে দেশজুড়ে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে কিছুদিন অন্তত পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হোক। সিবিএসই, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং কমন ল’ অ্যাডমিশন টেস্ট বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো বলছেন, শীঘ্রই করোনার ভ্যাকসিন এসে যাবে। তাহলে তখনই পরীক্ষা নিলে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা নিশ্চিন্ত হতে পারেন।’ কিন্তু সেই যুক্তি খারিজ করে দেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। বলেন, ‘আপনি কী করে ধরে নিচ্ছেন যে পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা এসব মাথায় রাখছে না?’ মামলার পর্যবেক্ষণে তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ারের ঝুঁকি নেওয়া যায় না। পরীক্ষা না হলে ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষাবর্ষ নষ্ট করবে। তাই কোনওভাবেই তাদের ভবিষ্যৎ বিপদে ফেলা যায় না।’ এরপরেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, তারা সরকারের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবে না। আদালতের এই ঘোষণায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে অভিভাবক মহল।