← স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান
লকডাউনে খুদেরা ওবেসিটির কবলে পড়ছে না তো?
সাধারণভাবে প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন ‘ওবিস’ তথা স্থূল বা অতিরিক্ত মোটা হয়। এমনিতে সদ্যোজাত ‘ওভারওয়েট’ হলেও ভবিষ্যতে তা স্থায়ী হয় না। কিন্তু ৩-৪ বছর বা ৭-৮ বছর বয়সি শিশু, যারা ইতিমধ্যেই স্থূলতার শিকার, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা চিন্তার। এখন আরও বাড়ছে।
আপনার সন্তান কি ‘ওবিস’?
জানার উপায় বডি মাস ইন্ডেক্স তথা বিএমআই নির্ধারণ। বিএমআই ৩০-এর উপর হলে, স্থূল ধরা হয়। ৩০-৩৫-এর মধ্যে হলে ক্লাস ওয়ান, ৩৫-৪০-এর মধ্যে থাকলে ক্লাস টু এবং ৪০-এর উপরে হলে ক্লাস থ্রি অর্থাৎ ‘মরবিড ওবেসিটি’।
কেন বাড়ছে এত ওজন?
- প্রথমত, জেনেটিক। বাবা-মা স্থূলকায় হলে সন্তানও স্থূল হতে পারে। জন্মগত রোগের কারণেও হতে পারে।
- দ্বিতীয়ত, পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিক কারণ। লকডাউনের সময় শিশুরা সারাদিন গৃহবন্দি। আউটডোর গেম বন্ধ। পড়াশোনা চলছে অনলাইনে। ফলে শিশুর অনেকটা সময় কাটছে মোবাইল ফোন বা ট্যাবে। শরীরচর্চা কম হচ্ছে। ওবেসিটি বাড়ছে।
- শিশুরা টেনশনে থাকলে, তাদের মেটাবলিজম কমে যায়। ফলে যতটা ক্যালোরি ব্যয় করার কথা, তা হয় না। সেটা শরীরে জমে স্থূলতা বাড়ায়।
- শিশুরা ‘স্ট্রেসড’ থাকলে খিদে বেশি পায়। অথচ খাওয়ার ফলে যে ক্যালোরি শরীরে জমছে, তা ‘বার্ন আউট’ হয় না অর্থাৎ ঝড়ছে না। ফলে মোটা হতে থাকে।
ওবেসিটি কি বিপজ্জনক?
- অবশ্যই। ছোট বয়সেই ওবিসিটি গ্রাস করলে শরীরে মেটাবলিজম কমতে থাকে। ফলে ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
- টাইপ টু ডায়াবিটিস, হরমোনাল পরিবর্তন এমনকী, পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যাও (পিসিওডি) হতে পারে।
- তাছাড়া স্থূলতা থাকলে হাই প্রেসার, কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা, নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার, অস্টিও আর্থারাইটিস ও স্লিপ অ্যাপনিয়ার (ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া) মতো নানা অসুখ ছোট বয়সেই দেখা দিতে পারে।
সমাধান
- শিশুর ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ঘরে থাকলেও ইনডোর গেমসে মাতিয়ে রাখুন। ইউটিউবে শিশুদের হপিং, স্কিপিং, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজেরও প্রচুর ভিডিও পেয়ে যাবেন।
- বাচ্চারা সবসময় দেখে শেখে। তাই অভিভাবকরা শরীরচর্চা করলে সন্তানরাও তাতে উৎসাহী হবে।
- শিশু মোটা হচ্ছে মানে সে সুস্থ সবল, মায়েরা এটা ভাববেন না। ওজন বৃদ্ধির কুফল সবার শরীরের যথেষ্ট।
- সারাদিন পড়াশোনার বাইরে শিশুকে মোবাইল বা বসে বসে টিভি দেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে দেবেন না।
- শিশুকে রোজ ভাজাভুজি, মুখরোচক খাবার না খাইয়ে বেশি খাওয়ান শাক, সবজি, ওটস। ওটসে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা জল ধরে রাখে, ফ্যাট শোষণে বাধা দেয়।