আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

বর্ণবিদ্বেষের ভ্যাকসিন হয় নাঃ কমলা হ্যারিস

August 21, 2020 | 2 min read

ইতিহাস গ‌ড়লেন কমলা হ্যারিস। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন গ্রহণ করলেন তিনি। আমেরিকার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন এবং কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা প্রেসিডেন্টের ডেপুটি হওয়ার লড়াইয়ে নামলেন। আগামী ৩ নভেম্বর আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে চারদিনের ন্যাশনাল কনভেনশন ডেকেছে ডেমোক্র্যাটরা। সেখানেই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেনের সহকারী হিসেবে মনোনয়ন গ্রহণ করেন তিনি। তারপরই বক্তব্য রাখতে গিয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। করোনার জেরে বহু মার্কিন নাগরিকের জীবন ও জীবিকার ক্ষতি হওয়ায় তাঁকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন কমলা। তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণেই দেশবাসীর জীবন-জীবিকা সঙ্কটের মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বর্ণ ও জাতিভেদ ভুলে সকলকে একত্রিত হয়ে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেনকে সমর্থন করার আহ্বান জানান প্রথম ইন্দো-আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। তাঁর কথায়, আমাদের এমন একজন প্রেসিডেন্টকে নির্বাচন করতে হবে, যিনি দেশের উন্নয়নে আরও ভালোভাবে কাজ করবেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি শেষ করবেন। শেতাঙ্গ, কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিন, এশীয় ও আদিবাসীদের একত্রিত করে দেশকে উন্নত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। তাই প্রেসিডেন্ট পদে জো বিডেনকেই নির্বাচিত করতে হবে।

এরপরই ট্রাম্পকে নিশানা করে কমলা হ্যারিস বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতীয় বিপর্যয়কে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। করোনা ও বর্ণবিদ্বেষ নিয়েও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন কমলা। তাঁর কথায়, করোনা সঙ্কট এবং বর্ণবিদ্বেষের কারণে দেশে বিভাজন তৈরি হয়েছে। বর্ণবিদ্বেষের কোনও ভ্যাকসিন নেই। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের মায়ের কথাও উল্লেখ করেছেন কমলা। তিনি বলেন, উনি আমাকে শিখিয়েছেন, অন্যদের জন্য কিছু করাই জীবনের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হওয়া উচিত। মা এখানে থাকলে খুব ভালো হত। কিন্তু আমি জানি, উনি উপর থেকে সব দেখছেন।

অতীতেও নিজের সাফল্যের জন্য মায়ের শিক্ষাকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন কমলা। এদিনও তাঁর বক্তব্যে সেকথাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ভাষণে ব্যবহার করেন তামিল উদ্ধৃতিও। ২০০৯ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কমলার মা শ্যামলা গোপালন হ্যারিসের মৃত্যু হয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি মার্কিন মুলুকে পা রেখেছিলেন। নামজাদা ক্যান্সার গবেষক ও সমাজকর্মী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন শ্যামলা। অন্যদিকে, ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে বেশ কয়েকটি প্রদেশে আমেরিকায় বসবাসকারী এশীয় ও অন্যান্য অভিবাসীদের ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন এই ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী।

এদিকে, হ্যারিস মনোনয়ন গ্রহণ করার পর তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন বিডেন সহ তাবড় ডেমোক্র্যাট নেতারা। ট্যুইট করে বিডেন বলেন, দুর্দান্ত একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কমলার। এখন নষ্ট করার জন্য এক মিনিটও সময় নেই। অনেক কাজ করতে হবে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, বিডেন একদম যোগ্য ব্যক্তিকে সহযোগী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। একই বক্তব্য পেশ করেছেন হিলারি ক্লিনটনও। আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলসি কমলার প্রশংসা করে বলেন, দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওঁর মতোই একজনকে দরকার। কমলা মনোনয়ন গ্রহণ করার উচ্ছ্বসিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনিদের একটা বড় অংশ।  ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে ভাষণের পর কমলা হ্যারিস। পাশে স্বামী এমহফ। -পিটিআই

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#america, #kamala harris

আরো দেখুন