‘এখনকার সব বিজেপি নেতারা তোলাবাজ’, তৃণমূলে যোগ দিয়ে সোচ্চার বিজেপি নেতা
হিসেব উলটে যাচ্ছে প্রতিদিন। প্রায় প্রতিদিনই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলায়। অথচ লোকসভা ভোটের নিরিখে ও বিজেপি নেতাদের দাবি মানলে, তাঁদের অনুকূলেই দলবদল বেশি হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটছে না। বিজেপির নেতা-কর্মী তো বটেই, বিধায়কও যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এবার লোকসভায় শক্ত ঘাঁটি হয়ে ওঠা কোচবিহারেও ভাঙন ধরল গেরুয়া শিবিরে। এবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন দলের বর্ষীয়াণ নেতা উৎপলকান্তি দেব ও বিজেপির তিন বারের পঞ্চায়েত সদস্য অনুপম দে। তাঁদের সঙ্গে অনুগামীরাও যোগ দিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে।
তবে, দলবদল করেই থেমে থাকেননি ওই দুই নেতা। বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে রীতিমতো চমকপ্রদ অভিযোগ তুলেছেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ প্রতিদিনই তুলে থাকে বিজেপি শিবির। কিন্তু এবার দলবদল করেই বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বকেই তোলাবাজ বলে অভিহিত করলেন ওই দুই নেতা।
উৎপলকান্তি দেবের কথায়, ‘১৯৮৩ সাল থেকে বিজেপি করছি। কিন্তু সেই বিজেপি আর নেই। এখন দলের সব নেতাই তোলাবাজিতে ব্যস্ত। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন নয়, এখনকার বিজেপি নেতাদের একটাই কাজ-তোলাবাজি। রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি, কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। তাঁরা এখানে আসেন, নিজেদের ভাগ বুঝে চলে যান। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভুলভাল বকে যাওয়া ছাড়া আর তোলাবাজি করে যাওয়া ছাড়া আর কোনও কাজ নেই ওদের।’ যদিও এই দলবদলকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। তবে, তৃণমূলের দাবি, এই যোগদান এখন থেকে নিয়মিত চলবে। বিজেপির কফিনে পেরেক পুঁতবে কোচবিহার।
উল্লেখ্য, এবছরের একুশে জুলাই ‘শহিদ দিবস’-এর ভার্চুয়াল সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহ্বান করেছিলেন, যাঁরা অন্য দল থেকে তৃণমূলে যোগ দিতে চান, তাঁদের সকলকে স্বাগত জানানো হবে দলে। সেই বার্তার পর থেকেই জেলায় জেলায় তৃণমূল নেতাদের তরফে অন্য দলের নানা স্তরের নেতা-কর্মীদের দলে যোগদান করানোর বিষয়ে বাড়তি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি তৃণমূলের বড় অংশে ভাঙন ধরাবে বলে জল্পনা চলছিল। বিজেপির রাজ্য নেতারাও সেই দাবি করে চলেছিলেন নিয়মিত। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, শাসকদলের উলটো চাপে এবার বিজেপিকেই ক্রমশ দিশেহারা লাগছে। শুধু তাই নয়, ঘর গোছানোর পরিবর্তে প্রবল গোষ্ঠীকোন্দলেও ভুগছে রাজ্য বিজেপি। আর সেই সুযোগটাকেই ক্রমশ কাজে লাগাচ্ছে তৃণমূল শিবির।