রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার ৮ শতাংশের নীচে, স্বস্তি সুস্থতায়
করোনার জন্য ভয়ে গুটিয়ে থাকার দিন বোধহয় শেষ হতে চলেছে। মঙ্গলবার বিকেলে পরপর দু’টি ট্যুইটবার্তায় অন্তত সেই ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। তাদের বক্তব্য, টানা আট সপ্তাহ পর রাজ্যে সংক্রমণের হার আরও কমল। এবার তা আটেরও নীচে। সোমবার বুলেটিন থেকে জানা যাচ্ছে, মোট পরীক্ষা হওয়া মানুষজনের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৯৮ শতাংশে।
বাংলায় সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছিল আগস্ট মাসের ৫-৬ তারিখ থেকে। শিখরে পৌঁছয় আগস্ট মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। তখন পজিটিভ কেসের হার ছিল ৮.৯ শতাংশ। তারপর থেকে ক্রমেই কমছে সংক্রমণের হার। মাসের মাঝামাঝি সময়, অর্থাৎ ১৬ সেপ্টেম্বর সংক্রমণের হার নেমে এসেছিল ৮.১৪ শতাংশে। তারপর ধারাবাহিকভাবে এই হার কমছে। সংক্রমণের হার কমে এখন সাতের ঘরে। তাতেই স্বস্তি পাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। এবং এই পরিসংখ্যান আশাও জোগাচ্ছে।
করোনা মোকাবিলায় রাজ্যওয়াড়ি সাফল্যের নিরিখেও এগিয়ে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন। সারা দেশের প্রথম সারির করোনা আক্রান্ত রাজ্যগুলির মধ্যে বাংলার স্থান ১০ নম্বরে। ২৮ সেপ্টেম্বরের হিসেব অনুযায়ী, দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে—২ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩৩ জন। কর্ণাটকে এক লক্ষ ৪ হাজার ৪৮ জন, অন্ধ্রপ্রদেশে ৬৩ হাজার ১১৬ জন, কেরলে ৬১ হাজার ৭৯১ জন, উত্তরপ্রদেশে ৫৩ হাজার ৯৫৩ জন, তামিলনাড়ুতে ৪৬ হাজার ২৮১ জন, ওড়িশায় ৩৭ হাজার ২১৬ জন, তেলেঙ্গানায় ২৯ হাজার ৪৭৭ জন, দিল্লিতে ২৭ হাজার ১২৩ জন এবং পশ্চিমবঙ্গে ২৫ হাজার ৮৯৯ জন সক্রিয় করোনায় আক্রান্ত।
স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, করোনা একেবারেই নতুন একটি অসুখ। তাই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের জায়গাই নেই। কলকাতায় সংক্রমণ বৃদ্ধির গতি অনেকটাই রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এবার তাঁদের লক্ষ্য জেলার দিকে। পাশাপাশি পুজোর সময় কলকাতার দিকেও সতর্ক দৃষ্টি থাকবে। এদিকে, রাজ্য সরকার জানিয়েছে, করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ তাঁর রক্তের সম্পর্কের নিকটজনকে দেওয়া হবে। আত্মীয়স্বজন মিলিয়ে ছ’জন সেই দেহ নিয়ে হাসপাতাল থেকে সরাসরি নিজ নিজ ধর্মীয় মতে শেষকৃত্য পালনের জায়গায় যেতে পারবেন। তবে যেতে হবে আলাদা গাড়িতে। সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় নিয়মবিধি মানতে হবে সবাইকে।
এদিন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতায় আনা হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার সচিব হরিহরপ্রসাদ মণ্ডলও কোভিড পজিটিভ। তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। উপসর্গ নেই। শারীরিক অবস্থাও স্থিতিশীল। করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন সোনামুখী গ্রামীণ হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসক ডাঃ সন্দীপকুমার দে। দুর্গাপুরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি।