জনমত সমীক্ষা বিডেনের পক্ষে, নিজেকে জয়ী ঘোষণা ট্রাম্পের
জনমত তিনি কেয়ার করেন না। তিনি মনে করেন, মত যাই হোক না কেন, ‘জন’ থাকবে তাঁরই পক্ষে। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের পর যাবতীয় পরিসংখ্যান তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। সাফ কথা, জিতছি আমিই। তাঁর জন্য মাত্র ২৮ শতাংশ সার্বিক জনমত যথেষ্ট। গতবারের অভিজ্ঞতাও সেকথা বলছে। ২০১৬’য় হিলারি ক্লিন্টনের পক্ষে গিয়েছিল জনমত সমীক্ষার রায়। ঠিক যেমন এবার ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বিডেনের বক্তব্যকে গ্রহণযোগ্য মনে করছেন দশের মধ্যে ছ’জন ভোটার। প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের ৪৮ ঘণ্টা পর প্রকাশ্যে আসা একাধিক সমীক্ষার ফল নিয়েই গরম হয়ে উঠেছে মার্কিন মুলুক।
দেখা গিয়েছে, ৬৫ শতাংশ মানুষ বিডেনের কথাকে মান্যতা দিচ্ছেন। ২৯ শতাংশ মানুষের মতে, ট্রাম্প সত্যি বলেছেন। জনমত অবশ্য প্রথম থেকেই ট্রাম্পের বিপক্ষে ছিল। ক্লিভল্যান্ডের প্রথম বিতর্কসভার আগের সমীক্ষায় ৫৬ শতাংশ ভোটার ছিলেন বিডেনের দিকে। তুলনায় ৪৩ শতাংশ ভোটার ভেবেছিলেন বিতর্ক মঞ্চে কামাল করবেন ট্রাম্প। কিন্তু সমীক্ষায় কী যায়-আসে! অধ্যাপক মিচেল ম্যাকিনের কথায়, ’১৬ সালের কথা মনে আছে? হিলারি ক্লিন্টনের পক্ষে ছিল ৬২ শতাংশ জনমত। ২৭ শতাংশেই বাজিমাৎ করেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট। জনমত সমীক্ষা নির্বাচনকে সেভাবে প্রভাবিত করে না।
ট্রাম্পও তাই মনে করছেন। নয়তো বিতর্ক সভার পরদিন হোয়াইট হাউসে দাঁড়িয়ে বলতে পারতেন না, ‘মঙ্গলবার রাতে আমরা প্রতি পদক্ষেপে জিতেছি। বিতর্কের দিক থেকে বিডেন খুবই দুর্বল। দেশ চালানোর পক্ষেও।’ তাঁর দাবি, ‘সংবাদমাধ্যমের যা করা উচিত ছিল, সেই কাজ আমি করেছি। ৪৭ বছর ধরে বিডেন যে মিথ্যাচার-বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তা সামনে এনেছি। তাঁর ব্যর্থতার খতিয়ান ফাঁস করে দিয়েছি।’ বিডেনের এই হারের পর ডেমোক্র্যাটরা তাঁদের প্রার্থীকে পরবর্তী বিতর্কসভাগুলি থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছে— মন্তব্য বিদায়ী প্রেসিডেন্টের। পরবর্তী দু’টি বিতর্ক সভা হবে ফ্লোরিডা ও টেনেসিতে। এখন থেকেই তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সূত্রে বলেও ফেলেছেন, ‘বিডেনের সঙ্গে বিতর্কে যোগ দিতে আমার কোনও আপত্তি নেই। তবে শুনেছি যে, তিনি নাকি বিতর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চান। তা ঠিক কি না, জানি না।’ মিনেসোটার ডুলুথে প্রচারের সময়েও মঙ্গলবার রাতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন ট্রাম্প। বলেন, ‘বিডেনের সঙ্গে বিতর্কের অভিজ্ঞতা অসাধারণ।’
ট্রাম্প-বিডেন বিতর্ক নিয়ে অবশ্য মার্কিন ভোটাররা চূড়ান্ত হতাশ। তাঁদের কাছে গোটা বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকর। অসম্মানের। লাস ভেগাসের বাসিন্দা ৫৪ বছরের রিকি হ্যাম্পটনের কথায়, ‘আমি আশাহত। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’ লাস ভেগাসের অপর বাসিন্দা কিথ ভ্যালেন্টাইন মনেপ্রাণে ডেমোক্র্যাট সমর্থক। ট্রাম্পের আচরণে বেজায় ক্ষুব্ধ তিনি। বলেছেন, ‘আমি বিডেনকেই ভোট দেব। এই প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত নার্সিসিস্ট।’ ভোটাররা যাই বলুন, বিতর্ক-বিজয় নিয়ে ট্রাম্পোচিত দাবি থেকে সরতে নারাজ প্রেসিডেন্ট।