দেশ বিভাগে ফিরে যান

মূল্যবৃদ্ধি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই, জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক

October 10, 2020 | 2 min read

ছবি: ফাইল চিত্র

অপরিবর্তিতই থাকছে রেপো রেট। এবং প্রত্যাশিতভাবেই। অর্থাৎ, ব্যাঙ্কগুলিকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সুদে ঋণ প্রদান করে, সেই হার কমানো হচ্ছে না। ফলে গাড়ি ও বাড়ির ঋণে সুদের হার আপাতত কমছে না। এর নেপথ্য কারণ একটাই—মূল্যবৃদ্ধি। এমনকী, আগামী কয়েক মাসেও মূল্যবৃদ্ধি কমার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে স্বীকার করে নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। করোনা মহামারী এবং লকডাউনের ধাক্কায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এমনিতেই আকাশছোঁয়া। সেই সমস্যা থেকে মুক্তির যে সুরাহা আপাতত মিলছে না, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। তিনদিনের বৈঠক শেষে আরবিআইয়ের এই সিদ্ধান্ত থেকে আশা করাই যায়, ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হার আপাতত আর কমছে না। যদিও গৃহঋণের ক্ষেত্রে সম্পত্তির মূল্যের উপর ঋণপ্রাপ্তির নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। এর ফলে রিয়েল এস্টেট সেক্টর কিছুটা লাভের মুখ দেখবে। তবে এই পরিস্থিতিতেও আগামী বছরের মার্চ মাসে ধীরে ধীরে মুদ্রাস্ফীতির হার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ধার্য করা লক্ষ্যমাত্রার দিকে যাবে বলে আশা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার। তার আগে নয়।
করোনা আবহে এখনও অবশ্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ আর্থিক বৃদ্ধির হার। কখনও বিশ্বব্যাঙ্ক, কখনও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, কখনও বিশ্বজুড়ে থাকা আর্থিক রেটিং সংস্থা—কম-বেশি সকলেই বলেছে, আর্থিক মন্দার কারণে ২০২০-২১ সালে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার হবে মাইনাস ৯ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে। সেই পূর্বাভাসগুলিকে বস্তুত সরকারিভাবে স্বীকার করে নিয়ে শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিল, চলতি আর্থিক বছরের শেষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধিহার হতে চলেছে মাইনাস ৯.৫ শতাংশ। তবে আর্থিক নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস আশার আলোও দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কোনও সংশয় নেই যে, অর্থনীতির চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। প্রামাণ্য মাপকাঠি হিসেবে তিনি বলেছেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বর থেকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, গ্রাম ও শহরে বহু মানুষ আবার নিজেদের জীবিকায় ফিরছেন। অফিসে, কর্মস্থলে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও আর্থিক লেনদেন লক্ষণীয়ভাবে বাড়ছে। কেনাকাটার প্রবণতা বৃদ্ধিতে স্বাভাবিকের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বাজার অর্থনীতিতে। উৎপাদন ক্ষেত্র দীর্ঘদিন স্তব্ধ থাকার পর গতি পেতে শুরু করেছে। অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়তে দেখা যাচ্ছে। অবশেষে পরিযায়ী শ্রমিকরা আবার নিজেদের গ্রাম ও জনপদ থেকে বেরিয়ে শহরের কর্মস্থলে যেতে শুরু করেছেন। বহু শহরে পুরোদস্তুর কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্রামীণ ভারতের ঘুরে দাঁড়ানোটা এক্ষেত্রে সত্যিকারের আশাব্যঞ্জক চিত্র। বিশেষ করে যখন বোঝা যাচ্ছে, খরিফ শস্যের এবার রেকর্ড উৎপাদন হবে। গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, চলতি আর্থিক বছরের জিডিপি বৃদ্ধিহারের পূর্বাভাস মাইনাস ৯.৫ শতাংশ দেওয়া হলেও, আশা করা যাচ্ছে আগামী আর্থিক বছরেই জিডিপি আবার পজিটিভ গ্রোথের অভিমুখে ফিরতে শুরু করবে।
এরই পাশাপাশি রাজ্যগুলিকে ঋণগ্রহণের সুবিধা প্রদানের জন্য ‘ওয়েজ অ্যান্ড মিনস’ খাতের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত সম্প্রসারিত করেছে আর্থিক নীতি নির্ধারণ কমিটি। একইভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত টার্নওভারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে করা হয়েছে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। এতদিন যা ছিল ৫ কোটি টাকা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#India, #RBI, #Repo Rate, #Shaktikanta Das

আরো দেখুন