ইন্দো-মার্কিনিদের কাছে প্রথম পছন্দ বিডেনই
ভোটের দিন এগচ্ছে। আর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ছে ট্রাম্পের। বিদায়ী প্রেসিডেন্টের বদলে জো বিডেনের দিকে ঝুঁকছেন ইন্দো-আমেরিকানরা। সাম্প্রতিক সমীক্ষার হিসেব অন্তত এমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। দেখা গিয়েছে, ৭২ শতাংশ ইন্দো-আমেরিকান ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে রিপাবলিকান ট্রাম্প। মাত্র ২২ শতাংশ জনসমর্থন রয়েছে তাঁর পক্ষে। নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের দিকে এই অংশের ভোটব্যাঙ্ক ঘুরতে পারে—এমন আশা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা।
মোদি-ট্রাম্পের সুসম্পর্কের জোর খাটিয়ে ভারতীয় ভোট হাসিল করার লক্ষ্য ছিল রিপাবলিকানদের। কিন্তু ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসকে পাশে নিয়ে মোক্ষম চাল দেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বিডেন। ‘কমলা’ ফ্যাক্টরের কারণেই ইন্দো-আমেরিকানদের মধ্যে ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা এগিয়ে বলে জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টেন সলটিস অ্যান্ডারসন। ভারতের মার্কিন দূতাবাস ও কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেট আয়োজিত এক ওয়েবিনারে তিনি বলেন, ‘অভিবাসী জনগোষ্ঠীগুলির মধ্যে ভারতীয়রা দ্বিতীয় স্থানে। আমেরিকার ভোটে ইন্দো-মার্কিনিরা উভয় পক্ষের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কমলা হ্যারিসকে বেছে নেওয়াই ডেমোক্র্যাটদের মাস্টারস্ট্রোক। তাঁর কারণেই অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন বিডেন।’ সেপ্টেম্বরের ১-২০ তারিখ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান আমেরিকান অ্যাটিটিউড সার্ভে (আইএএএস) চালানো হয় ৯৩৬ জন ইন্দো-মার্কিনির মধ্যে। ইউগভের সঙ্গে যৌথভাবে কার্নেগি এন্ডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস ও জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের চালানো সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অধিকাংশই ভরসা রাখছেন বিডেনের উপর। আর এই ফল সামনে আসতেই চাপ বেড়েছে ট্রাম্প শিবিরের উপর।
রিপাবলিকানদের দাবি ছিল, কাশ্মীর, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মতো ইস্যুতে ভারতের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন বিডেন। এতেই ক্ষুব্ধ ইন্দো-আমেরিকানরা ফের প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পকে চাইছেন। অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যে নরেন্দ্র মোদির আবেগকে কাজে লাগাতে গত বছর ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠান করেছিলেন ট্রাম্প। ভোটের দিকে তাকিয়েই। ৫০ হাজার মানুষের সেই সভা থেকে স্লোগান উঠেছিল, ‘আব কি বার, ট্রাম্প সরকার।’ আসন্ন নির্বাচনে সেই সভার প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে ট্রাম্পবিমুখ হলেও অনাবাসী ভারতীয়দের বড় অংশ এখনও মোদির পক্ষে। সমীক্ষায় প্রকাশ, ৪৮ শতাংশ ইন্দো-মার্কিনি মোদির কাজে সন্তুষ্ট। অখুশি ৩২ শতাংশ। বাকি ২০ শতাংশ এবিষয়ে কোনও মতামত দেয়নি। তবে ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হবে বলে মত ৩৯ শতাংশের। তুলনায় রিপাবলিকানের পক্ষে সওয়াল করেছেন মাত্র ১৮ শতাংশ। মোদির বন্ধুত্বও ট্রাম্পের পালে হাওয়া দিতে পারছে না। চাপ বাড়ছে রিপাবলিকানদের।