কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

হালদার বাড়িতে বন্ধ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান, দাঁ বাড়িতে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধ

October 16, 2020 | 2 min read

জোড়াসাঁকোর দাঁ বাড়ির পুজো এবার ১৮১তম বছরে পদার্পণ করল। ১৮৪০ সালে শিবকৃষ্ণ দাঁ এই পুজোর সূচনা করেন। এই বছরও প্রতিমার কাঠামোয় কোনও পরিবর্তন হয়নি। তবে মহামারীর জেরে কমানো হয়েছে চালচিত্রের জাঁকজমক। পরিবারের সদস্য অতনু দাঁ জানিয়েছেন, নিরঞ্জনের সময় দেবী প্রতিমা যাতে সহজেই বহন করে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্যই এই ব্যবস্থা। ভার কমাতে এবারে একচালায় থাকবে না মা দুগ্গার ছেলে-মেয়েরা। সেই মূর্তিগুলি থাকবে তফাতে, আলাদা আলাদা ভাবে। কলা বৌ স্থানের জন্য গঙ্গায় যাওয়া হচ্ছে না। জল আগেই তুলে আনা হবে। বাড়ির উঠোনেই হবে এই উপাচার। পুজোর ফুল স্যানিটাইজ করা থাকবে। অঞ্জলিতে পারস্পরিক স্পর্শ এড়াতে সকলের হয়ে প্রতিমাকে ফুল নিবেদন করবেন শুধুমাত্র পূজারি। ভোগে অন্যান্য বারের মতোই লুচি, ক্ষীর, দই, মিষ্টি, নিমকি থাকবে। সব সামগ্রী তৈরি হবে বাড়িতেই। নৈবেদ্যে দেওয়া হবে গোটা ফল। এবার ব্রাত্য সিঁদুর খেলাও। কোভিডের কারণে আসন্ন পুজোয় বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ। নিরঞ্জনের সময়ও শুধুমাত্র বাড়ির সদস্য এবং কর্মীরাই থাকবেন।

৪৫০তম বছরে পদার্পণ করল বাগবাজারের হালদার বাড়ির পুজো। কথিত আছে, ১৫৬০ সালে তৎকালীন চন্দননগর নিবাসী জমিদার কৃষ্ণপ্রসাদ হালদার এক স্বপ্নাদেশ পান। দেবী জানান, ওড়িশার সাহেবপুরে প্রায় ১৪ ফুট মাটির নীচে অধিষ্ঠান করছেন তিনি। সঠিক স্থানে মাটি খুঁড়ে কষ্টি পাথরের মহিষমর্দিনী মূর্তির সন্ধান মেলে। মাটির এত নীচে থাকা সত্বেও প্রতিমাটি ছিল খুঁতহীন। পাথরের এই মূর্তিটির উচ্চতা ২ ফুট। ওজন ২৫ কিলো। পরে ব্যবসায়িক কারণে চন্দননগর ছেড়ে বাগবাজারে চলে আসেন হালদাররা। পুজো শুরু হয় এখানে। পরিবারের অন্যতম সদস্য দেবাশিস হালদার জানান, ‘সম্ভবত মূর্তিটি পাল যুগে নির্মিত। লন্ডন, কলকাতা এবং চন্দননগর মিউজিয়ামেও এই ধরনের দেবী মূর্তি রয়েছে। কিন্তু সেগুলি নিখুঁত নয়।’ বাড়ির সদস্যদের বিশ্বাস, মা দুর্গা এই বাড়িতে আসেন পূজা পেতে এবং মর্ত্যবাসীদের আশীর্বাদ করতে। অনেকের দাবি, প্রতিমার সামনে ১০৮টি প্রদীপ কীভাবে সাজানো হবে তা স্বপ্নাদেশের মাধ্যমে বলে দেন জগজ্জননী। পুজোর ষষ্ঠী এবং দশমী এই বাড়ির সকলে আমিষ খান। বাড়ির মহিলারা ষষ্ঠীর দিন মৎসমুখ করে দেবী বরণ করেন। নিত্য ভোগে মাকে প্রথমে দেওয়া হয় লেবুর সরবত। ষষ্ঠীর দিন হয় পোলাও। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে হয় খিচুড়ি ভোগ। প্রতিদিন সকালে মায়ের ভোগের সঙ্গে থাকে পাঁচরকম ভাজা, পায়েস মিষ্টি। রাতে ঘিয়ে ভাজা লুচির সঙ্গে নানরকম পদ। মহাষ্টমীর দিন থাকে বড় বড় চন্দ্রপুলী, গোটা ফল এবং একাধিক শুকনো মিষ্টি। করোনার জেরে এবার মাত্র একজন ঢাকিই রাখা হচ্ছে। মাস্ক পরে ঢুকতে হবে দর্শনার্থীদের। সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান এবার বন্ধ। দশমীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যাপার নেই। শুধুমাত্র ঘটের জল গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়। পঞ্চমী এবং দশমীতে গোটা বাড়ি স্যানিটাইজ করা হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Cultural program, #Haldar house, #Daa house

আরো দেখুন