ভারত নিয়ে ট্রাম্পের কটু মন্তব্যের সমালোচনায় সরব জো বাইডেন
প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসার যুক্তি দিতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার ভারত ও তাঁর বাতাসকে ‘নোংরা’ (ইংরেজিতে ফিলদি) বলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী বাইডেনের সঙ্গে বিতর্কে টেনেসির ন্যাশভিলে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় শনিবার বাইডেন এক টুইটে লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট ভারতকে নোংরা বলেছেন। বন্ধু (মিত্র দেশ) সম্পর্কে কেউ এ ভাবে কথা বলে না। এই ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিশ্বজনীন সমস্যার সমাধান করা যাবে না। কমলা হ্যরিস ও আমি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে গভীর মর্যাদা দিই। শ্রদ্ধাবোধকে আমরা আমেরিকার বিদেশনীতির কেন্দ্রে নিয়ে আসব।”
ভোটের মুখে মূল প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিতর্ক। প্রেসিডেন্ট এটা বোঝাতে চাইছিলেন যে, তিনি তাঁর ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে অটল থেকেই প্যারিস চুক্তি থেকে দেশকে সরিয়ে এনেছেন। নয় তো দেশের বহু কলকারখানা বন্ধ করতে হত। কাজ খোয়াতেন বহু আমেরিকাবাসী। ট্রাম্পের বক্তব্য, চিন, ভারত ও রাশিয়া বেশি দূষণ ঘটাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে তাদেরই বেশি দায়িত্ব নেওয়া উচিত। কিন্তু তারা সে দায় আমেরিকার ঘাড়ে চাপাতে চাইছে। এই প্রসঙ্গেই আক্রমাণত্মক সুরে ট্রাম্প বলেন, “চিনের হাল দেখুন। কী রকম নোংরা একটি দেশ। রাশিয়া বা ভারতের অবস্থা দেখুন, কী নোংরা, বাতাস মারাত্মক দূষিত।”
আমেরিকার বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো ও প্রতিরক্ষাসচিব মার্ক এসপার ভারত সফরে যাবেন কয়েক দিন পরেই। তার ঠিক আগে ট্রাম্পের ওই মন্তব্য এ দেশের ভারতীয়-আমেরিকানদের রুষ্ট করেছে, তা বুঝেই আসরে নামেন বাইডেন। সম্প্রতি এক সাপ্তাহিক পত্রিকায় বাইডেন লিখেছেন, যে যে সময়ে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক মজবুত হয়েছিল, ওবামা-বাইডেনের জমানা তার অন্যতম। বাইডেন-হ্যারিস জমানা সেই ধারা শুধু অব্যাহতই রাখবে না, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলবে। বাইডেন-হ্যারিসের বিদেশনীতিতেও তার প্রতিফলন দেখা যাবে।
বাইডেন লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে সঙ্গে নিয়ে লড়বেন। কারণ, এশিয়ায় শান্তি ও সুস্থিতির জন্যও ভারতকে প্রয়োজন। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি, পরিবেশ দূষণরোধ, পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধের লড়াইয়েও ভারতকে তাঁর খুব প্রয়োজন বলে বাইডেন উল্লেখ করেছেন।
ফ্লরিডায় প্রচারে গিয়ে বাইডেন ও কমলাকে আক্রমণ করে শুক্রবার ট্রাম্প দাবি করেন, “আমরা কোনও মতেই সামাজবাদী প্রেসিডেন্ট চাই না। ” এর জবাবে কমলা শনিবার বলেছেন, “বাইডেন ও আমি গর্বিত দেশপ্রেমিক। আমেরিকার বেশির ভাগ মানুষ ও আমরা একই মূল্যবোধে বিশ্বাসী।”