বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

ইমিউনিটি বুস্টার মিষ্টি দিয়েই এবার সাজছে পুজোর পসরা 

October 26, 2020 | 2 min read

করোনার সঙ্গে লড়তে হবে। তাই চাই ইমিউনিটি। কেউ সকাল-বিকেল তুলসিপাতা চিবোচ্ছেন, তো কেউ চায়ের সঙ্গে মেশাচ্ছেন লবঙ্গ-দারচিনি। মধু, অশ্বগন্ধা, যষ্টিমধু বা কাবাবচিনিও লুটেপুটে নিচ্ছেন অনেকে। আমবাঙালির ইমিউনিটি চর্চার এই বাজার ধরতে আসরে নেমেছেন মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। তাই ভিয়েনঘরে গত কয়েক মাস ধরেই ছানা, চিনি, গোলাপজলের সঙ্গেই দিব্যি বন্ধুত্ব হয়েছে গোলমরিচ, কালো জিরে বা পাঁচফোড়নের। পুজো-পার্বণে সেই দোস্তি আরও জোরদার। তৈরি হচ্ছে ইমিউনিটি মিষ্টি। পুজো মণ্ডপের লকডাউনেও তাদের ভালো বাজার মিলবে, আশায় দোকানিরা।

বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিকে ১৬ রকমের মশলা দিয়ে তৈরি হয়েছে ইমিউনিটি সন্দেশ। তাতে জায়ফল, জয়িত্রী, কেশরের সঙ্গেই জায়গা করে নিয়েছে কালো জিরে, কালো মরিচের মতো উপকরণ। সংস্থার কর্ণধার বলেন, ‘আমরা যখন প্রথম এই মিষ্টি আনি, তখন দিনে দু’হাজার পিস বিক্রি হতো। পরে বিক্রিতে কিছুটা ভাটা আসে। কিন্তু ফের ফিরছে চাহিদা।’ এর পাশাপাশি এবার পুজোয় অন্যতম আকর্ষণ হোয়াইট চকোলেট অমৃতি। সুদীপবাবু বললেন, গড়ন অমৃতির, কিন্তু স্বাদ একেবারে আলাদা। দাম ২০ টাকা। থাকছে পুজো স্পেশাল আগমনি সন্দেশ। যেন এক টুকরো শরতের ভোর। সাদা সন্দেশের নীচের দিকটি কেশরের রংয়ে ধোয়া। সূর্যোদয়ের মতো।

এবার পুজোয় গাঙ্গুরামের বাজি বেকড বা ভাপা দই। সঙ্গে চিরাচরিত রসগোল্লা ও সন্দেশ তো থাকছেই। এখানকার কর্তার কথায়, ‘আমরা ইমিউনিটি সন্দেশ বলে আলাদা করে কিছু বানাইনি ঠিকই। কিন্তু রোগ প্রতিরোধ করতে যে উপকরণগুলির জুড়ি মেলা ভার, সেগুলি আমরা ব্যবহার করে আসছি আমাদের মিষ্টিতে। সেই তালিকায় কাঁচা হলুদ, মধু, জয়িত্রী, জায়ফল বা দারচিনি তো সবসময়ই থাকে। এখনও আছে। নামজাদা মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান কে সি দাসেও এবার চিরাচরিত মিষ্টির বহর বেশি। অমৃতকুম্ভ, রসমালঞ্চ প্রভৃতি চেনা মিষ্টির সঙ্গে থাকছে বিনয়শ্রী। লালমোহন নামের আদ্যিকালের মিষ্টির পেটে দরবেশ পুর, তার উপর সন্দেশের রূপটান। স্বাদেও ফিউশন। এখন রসগোল্লাতেও অভিনবত্ব এনেছে কে সি দাস। ব্ল্যাক কারেন্ট বা চকোলেট থেকে শুরু করে নানা রং ও গন্ধের রসগোল্লা রয়েছে এখানে। কর্ণধার ধীমান দাশের কথায়, ‘বাঙালির পুজোয় নারকেল ছাপা, চন্দ্রপুলি থাকবে না, তা কি হয়? আমরাও তাই এসব চিরাচরিত মিষ্টি রেখেছি।’

শহরতলিতেও এবার ইমিউনিটির দাপট চলছে মিষ্টির দোকানে। রিষড়ার ফেলু মোদকের গুটকে কচুরিতে ছোলার ছাতুর সঙ্গে মিলেমিশে থাকছে আদা, শুকনো লঙ্কা, পাঁচফোড়ন আর গোলমরিচ। ‘হার্বস নিমকি’তে আবার জায়গা নিয়েছে কালো জিরে, জায়ফল, অশ্বগন্ধা, জয়িত্রী, জোয়ান ও দু’রকমের এলাচ। একেবারে অন্যরকম স্বাদ। ভোল বদলে ফেলেছে রাবড়িও। এখানকার অন্যতম কর্ণধার বলেন,, যাঁরা অল্প মিষ্টি পছন্দ করেন বা শারীরিক কারণে মিষ্টি খেতে সমস্যা হয়, তাঁদের জন্য তৈরি হয়েছে দু’রকমের মশলা রাবড়ি। একটি ছোট এলাচ ও জায়ফল দেওয়া। অন্যটিতে কেশর ও জয়িত্রী। মিষ্টির পরিমাণ অনেক কম। আর আছে এবারের স্পেশাল আইসক্রিম সন্দেশ। মোষের দুধের ছানার ‘বাটা পাক’ করে এমনভাবে তৈরি হয়েছে, যা দিব্যি ফ্রিজে রেখে খাওয়া যায়। স্বাদের খেলাপ হয় না। কেশর, পেস্তা আর বাটারস্কচের গন্ধভরা। মুখে দিলেই মিলিয়ে যায়। সন্দেশ না আইসক্রিম, বোঝা কঠিন। হাওড়ার ব্যাতাই মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের ইমিউনিটি বুস্ট আপ সন্দেশে আবার মশলার সঙ্গে থাকছে তুলসি। খেতেও চমৎকার। উপকারীও। কর্ণধার জানান, ‘প্রতি বছর পুজোয় আনারসের তোতাপুলি খুব জনপ্রিয় হয়, এবারও রেখেছি। তবে মহাষ্টমীতে এবারও লাঞ্চ প্যাকেজ করার চাপ রয়েছে। লুচি, ছোলার ডাল, আলুরদম, ভেজিটেবল চপের সঙ্গে থাকছে আমআদার চাটনি। সঙ্গে মিষ্টি তো থাকছেই। ১৬৫ টাকার প্যাকেজে বাঙালিয়ানা ভরপুর।’ 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga Pujo, #covid-19, #Boost Immunity, #Pujo Sweets

আরো দেখুন