৩৫ লক্ষ কর্মসংস্থানের ঘোষণা মমতার
কোভিড সঙ্কটেও রাজ্যের পাখির চোখ সেই কর্মসংস্থান। বৃহস্পতিবারের প্রশাসনিক বৈঠকে সেব্যাপারে আশার আলো দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোষণা করলেন, আগামী তিন বছরে ৩৫ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। যার মধ্যে ১৫ লক্ষই ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরি পাবেন ৫ লক্ষ বেকার যুবক। এছাড়া হ্যান্ডলুম এবং অন্যান্য সেক্টরে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শীঘ্রই নিউটাউনে ২০০ একর জমিতে প্রস্তাবিত সিলিকন ভ্যালির কাজ খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনেও যাবেন তিনি। প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে না পারায় বৈঠক থেকে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়রকেও সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
লক্ষ্য একুশের বিধানসভা নির্বাচন। তাই আগামী কয়েক মাসে সরকারি কাজে গতি আনাই লক্ষ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই দুর্গোৎসব মিটতেই তড়িঘড়ি প্রশাসনিক বৈঠকের ডাক দেওয়া হয় নবান্নের তরফে। এদিন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের পর শুরু হয় সরকারি অনুষ্ঠান। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, বীরভূম সহ বেশ কয়েকটি জেলায় বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যজুড়ে ১০টি আয়ুষ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং তমলুকের নিমতৌড়িতে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রশাসনিক ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন হয় তাঁর হাতে।
এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষত মাটির সৃষ্টি, পথশ্রী প্রকল্পে ভালো করে কাজ করার কথা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা রাস্তা তৈরিতে প্রথম। গত ৯ বছরে ৯ লক্ষ কিমি রাস্তা করেছি। সরকারি টাকা ঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। গ্রামীণ রাস্তায় কোনওমতেই ওভারলোডেড ট্রাক যাবে না।’ মাটির সৃষ্টির কাজে জেলায় জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যজুড়ে বিনামূল্যে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা দিতে ৩,৪৩৭টি বাংলা সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কেন্দ্র পিছু চাকরি পেয়েছেন দু’জন করে। তা নিয়েও বিরোধীরা কুৎসা রটাচ্ছে বলে এদিন সরব হয়েছেন মমতা।
তবে, মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে পড়েছেন পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্তারা। লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যাপারে দপ্তরের পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয় বলেই রিপোর্ট। আধিকারিকদের সতর্ক করার পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় ১০০ দিনের কাজের বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা জেলাগুলির কর্তাদের সেখানকার সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসতেও বলেছেন। এছাড়া, স্কুল খোলার প্রসঙ্গও ওঠে বৈঠকে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রাজ্যের বিদ্যালয়গুলিতে ছুটি রয়েছে। তারপরে এবিষয়ে পর্যালোচনা করার কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।