পর্যটকদের জন্য অত্যাধুনিক পরিষেবা আনতে চলেছে মুর্শিদাবাদ পুরসভা
মুর্শিদাবাদ ঘুরতে আসা দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক মানের রেস্তরাঁ তৈরি করছে মুর্শিদাবাদ পুরসভা। রেস্তরাঁ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২৫ ডিসেম্বর রেস্তরাঁটি চালুর টার্গেট সামনে রেখে জোরকদমে কাজ চলছে। ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ‘অতিথি’ রেস্তরাঁয় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের খাবারের স্বাদ পাবেন পর্যটকরা। অত্যাধুনিক মানের এই রেস্তরাঁ চালু হলে নবাবি তালুক মুর্শিদাবাদ শহরে পর্যটকদের দীর্ঘদিনের ভালোমানের রেস্তরাঁর দাবি পূরণ হবে বলে মনে করছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
রজ্যের অন্যতম পর্যটন শহর মুর্শিদাবাদ। নবাবি ইতিহাস সমৃদ্ধ এই শহরে পঞ্চাশের বেশি থাকা ও খাওয়ার হোটেল থাকলেও ভালোমানের রেস্তরাঁ (Resturant) নেই। হাতে গোনা কয়েকজন হোটেল ব্যবসায়ী অবশ্য লজিংয়ের পাশাপাশি রেস্তরাঁ চালু করেছেন। তা সত্ত্বেও মুর্শিদাবাদ ঘুরতে আসা পর্যটকদের মধ্যে নবাবের শহরে ভালো রেস্তরাঁ না থাকার আক্ষেপ থেকেই গিয়েছিল। অবশেষে পুরসভার উদ্যোগে সেই আক্ষেপ মিটতে চলেছে। শহরের নেতাজি আবাসের পাশেই অত্যাধুনিক মানের রেস্তরাঁ নির্মাণের কাজ চলছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্তরাঁ তৈরির মূল লক্ষ্য থাকলেও গ্রাউন্ড ফ্লোরে পার্কিংয়ের জায়গা থাকছে। তার উপরে রেস্তরাঁ থাকছে। রেস্তরাঁর উপরে লজিং-এর জন্য পাঁচটি ঘর থাকছে। দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের আধুনিক হোটেলের আদলে ঘরগুলিকে সাজানো হবে। শহরের অন্যান্য বেসরকারি হোটেলগুলির তুলনায় অনেকটাই কম রেটে ঘর ভাড়া দেওয়া হবে। তবে শুধু পর্যটক নয়, সকলেই আসতে পারবেন।
শহরের এক কলেজ পড়ুয়া প্রীতম হালদার বলেন, পুজো, বড়দিন বা যে কোনও অনুষ্ঠানে জমিয়ে খাওয়াদাওয়ার জন্য বহরমপুরে ছুটতে হতো। পুরসভার রেস্তরাঁ চালু হলে বহরমপুরে যেতে হবে না। স্থানীয় বাসিন্দা মিরাজ শেখ বলেন, বড় শহরের পাশাপাশি মফস্সলের বাসিন্দাদের মধ্যেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। অল্পবয়সিরা যেমন রেস্তরাঁ কালচারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, ঠিক তেমনই অনেকে সপ্তাহে দুই-একদিন সন্ধ্যায় পরিবার নিয়ে রেস্তরাঁয় গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেন। এখানে ভালো রেস্তরাঁ না থাকায় ইচ্ছে থাকলেও অনেকে যেতেন না।
মুর্শিদাবাদ পুরসভার (Murshidabad Municipality) প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন পর আবার পর্যটকরা আসছেন। পর্যটকদের অনেকেই সন্ধ্যার পর রেস্তরাঁয় গিয়ে খাওয়াদাওয়া এবং গল্পগুজব করতে পছন্দ করেন। তাঁদের এবং বাসিন্দাদের কথা ভেবেই অত্যাধুনিক মানের রেস্তরাঁ তৈরি হচ্ছে। দেশ-বিদেশের পর্যটকরা সারা বছর ধরে এই শহরে আসেন। তাই এই রেস্তরাঁয় দেশি ও বিদেশি দুই ধরনের খাবার পাওয়া যাবে। পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও রেস্তরাঁয় খাওয়াদাওয়া করতে পারবেন। ২৫ডিসেম্বর, বড়দিনে মুর্শিদাবাদ শহরে প্রচুর সংখ্যায় পর্যটক আসেন। ওই বিশেষ দিনটিতেই রেস্তরাঁ চালুর টার্গেট নেওয়া হয়েছে।