রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

রেলে চাকরির প্রতারণা, নাম জড়াল দিলীপের

December 1, 2020 | 2 min read

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘এমপি কোটা’য় রেলের গ্রুপ-ডি পদে চাকরি দেওয়া হবে। এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এগরায় দলের মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে। টাকা দেওয়ার পরও চাকরি না হওয়ায় প্রতারিতরা দিলীপবাবুর শরণাপন্ন হন। তাঁর নির্দেশে এগরা-১ব্লক উত্তর মণ্ডল সভাপতি রঞ্জন মহাপাত্রকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়। বিজেপির (BJP) কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তীও এই বিতর্কে জড়িয়েছেন। অনুপবাবুর নির্দেশে টাকা আদায় করা হয়েছে, এই মর্মে স্ট্যাম্প পেপারে বয়ান লিখে সই করেছেন অপসারিত রঞ্জনবাবু। যদিও ওই সই তাঁর নয় বলে রঞ্জনবাবু দাবি করেছেন। তবে, প্রতারিত বিজেপির বুথ কমিটির নেতাদের অভিযোগ, গোটা বিষয়টি অনুপবাবুকে জানিয়েও তাঁর সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। শেষপর্যন্ত দিলীপবাবুর কাছে নালিশ করার পর মণ্ডল সভাপতিকে সরানো হয়েছে।

এগরা বিধানসভা মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। এখানকার সংসদ সদস্য দিলীপবাবু। এগরা-২ব্লকের উত্তর তাজপুর গ্রামের বাদল দোলই ‘এমপি কোটা’য় রেলে ছেলের চাকরির (Rail Recruitment) জন্য রঞ্জন মহাপাত্রকে ১২লক্ষ ৬০হাজার টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেন। বাদলবাবুর ছেলে বিজেপির বুথ সভাপতি। এছাড়াও এড়েন্দাবাড় গ্রামের বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির ঠিকাদার অরবিন্দ মাইতি মোটা টাকা লোনের জন্য রঞ্জনবাবুকে এক লক্ষ টাকা দিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। ১০০টাকার স্ট্যাম্প পেপারে টাকা লেনদেনের বয়ান সহ উভয় পক্ষের সই রয়েছে। অরবিন্দবাবু বিজেপির স্থানীয় বুথ কমিটির সদস্য।


কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরানোর জন্য বিজেপির মণ্ডল সভাপতিকে বাদলবাবু এবং অরবিন্দবাবু চাপ দেন। এনিয়ে মধ্যস্থতা করেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপবাবু। চাপের পড়ে রঞ্জনবাবু ২লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ফিরিয়েছেন বলে তাঁরা জানিয়েছেন। বাকি টাকা না পাওয়ায় তাঁরা বিজেপির রাজ্য সভাপতির দ্বারস্থ হন।

পাল্টা চাপের কৌশল হিসেবে অরবিন্দবাবুর বিরুদ্ধে এগরা থানায় অপসারিত বিজেপির মণ্ডল সভাপতি প্রতারণার অভিযোগ করেছেন। বণ্টন সংস্থার ঠিকাদারের লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে অরবিন্দবাবু কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন। যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন অরবিন্দবাবু।

দিলীপবাবুর সাংসদ প্রতিনিধি আশিস নন্দী বলেন, উভয়পক্ষই আমাদের পার্টির কার্যকর্তা। রঞ্জন মহাপাত্রের বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ আমিই দিলীপবাবুর নজরে এনেছিলাম। কারণ আমি জানি, এইভাবে এমপি কোটায় রেলে চাকরি হয় না। তাই অভিযোগ ওঠায় দিলীপবাবুর নির্দেশেই জেলা কমিটি রঞ্জনবাবুকে মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে। দিলীপ ঘোষের ‘এমপি কোটা’য় রেলে চাকরি দেওয়ার নামে এভাবে টাকা তোলার ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির মধ্যে। টাকা আদায়ের বয়ান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ‘প্রতারিত’ বাদল দোলই এবং অরবিন্দ মাইতি বলেন, শুধু আমরা নয়, অনেকের কাছ থেকেই রঞ্জন মহাপাত্র দলের পদ ভাঙিয়ে টাকা তুলেছেন। চাপে পড়ে আমার ২লক্ষ ৮০হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। দিলীপবাবুকে সবটাই জানানো হয়েছে।

অভিযুক্ত রঞ্জন মহাপাত্র বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন। মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে আমাকে সরানো দলীয় সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে ওই ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। আর স্ট্যাম্প পেপারের সইটিও আমার নয়। বিজেপির জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, চাকরির দেওয়ার নামে একটা লেনদেন হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা থাকায় রঞ্জনবাবুকে সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে। রঞ্জন পাল্টা একটা এফআইআর করেছেন। পুলিস তার তদন্ত করছে। এই ঘটনায় অযথা আমাকে জড়ানো হচ্ছে। এতে আমার কোনও ভূমিকা নেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Rail Recruitment

আরো দেখুন