রক্ত দিয়ে চিঠি লিখব মোদিকে, হুঁশিয়ারি কৃষকদের
‘এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখব রক্ত দিয়ে।’ বৃহস্পতিবার যখন দিল্লিতে কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করছে কেন্দ্রীয় সরকার (Central Government), তখনই দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার তিক্রিতে অবরোধ করে রাখা কৃষকেরা এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। স্পষ্টতই ওই হুমকি রক্তচাপ বাড়িয়েছে সরকার পক্ষের। পরিস্থিতি যাতে ফের উত্তপ্ত হয়ে না ওঠে, সেই কারণে তিক্রিতে বন্দোবস্ত করা হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তার। চারস্তরীয় সেই ব্যারিকেড ভেঙে কার্যত মাছি গলারও উপায় নেই। বিশাল পুলিসবাহিনী তো আছেই। সেইসঙ্গে মজুত রয়েছে একাধিক ‘রায়ট কন্ট্রোল ভ্যান’ও। উড়ছে ড্রোন। তিক্রি সীমানায় উপস্থিত পুলিস আধিকারিকদের প্রশ্ন একটাই, ‘ভিড় কি আরও কিছুটা বৃদ্ধি পেল?’ নিয়মিত চালানো হচ্ছে কড়া নজরদারি। যদিও তাতে ‘কুছ পরোয়া নেহি’ মনোভাব নিয়েই অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকেরা। স্লোগান, হাততালি, ভাষণে কান পাতা দায়। আন্দোলনকারীদের হুমকি স্পষ্ট, ‘আগে কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হোক। নাহলে আরও বড় আন্দোলন।’
দিল্লি-রোহতক করিডর। রাস্তা ধরে খানিক এগলেই এমসিডি টোল প্লাজা। আপাতত পুলিসে পুলিসে ছয়লাপ। মজুত র্যাফ। সেই টোল প্লাজার কিলোমিটার খানেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে ব্যারিকেড। বিক্ষোভস্থলে পৌঁছনোর জন্য একের পর এক ব্যারিকেড টপকে যেতে হবে। কোথাও লোহার, কোথাও সিমেন্টের। প্রতিটি ব্যারিকেডেই পুলিস, র্যাফ বেষ্টনী করে দাঁড়িয়ে। দুটো ব্যারিকেডের মাঝখানেই একটি করে অস্থায়ী পুলিস ছাউনি। সর্বশেষ যে ব্যারিকেড, সেখান থেকে যতদূর চোখ যাচ্ছে, পুরোটাই মাথা আর মাথা বিক্ষোভকারী কৃষকদের। বিক্ষোভ বৃহস্পতিবার অষ্টম দিনে পড়েছে। আন্দোলনের তীব্রতার পরিপ্রেক্ষিতে সিংঘু সীমানা যদি ‘এপিসেন্টার’ হয়, তিক্রির স্থান তাহলে তার পরেই।
একেবারে গোড়ায় পাঞ্জাব-হরিয়ানার শম্ভু সীমানার পাশাপাশি কৃষক (Farmers) ও পুলিসের খণ্ডযুদ্ধ বেঁধেছিল সিংঘু এবং তিক্রিতেও। আর তারপর থেকেই দিল্লি-হরিয়ানা সীমানা বরাবর এই এলাকা পুলিসের মাথাব্যথার কারণ। নজরদারিতে যে ঢিলেমি নেই, তিক্রি ঘুরে তা স্পষ্ট। সিংঘু সীমানায় অবরোধ করে রাখা কৃষকেরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের কাছে আগামী ছয় মাসের রেশন মজুত রয়েছে। তিক্রি জানাল, রসদ রয়েছে অন্তত সাত-আট মাসের। অর্থাৎ, তাঁদের কোনও তাড়া নেই। রাস্তা অবরোধ করে একদিকে চলছে কৃষি আইন বিরোধী একের পর এক স্লোগান ও ভাষণ। অন্যদিকে রাস্তার একপাশে খাবারের জোগাড়ে ব্যস্ত বিক্ষোভকারীদের একাংশ। রুটি, সবজি। সঙ্গে কাঁচা পেয়াজ। বলবিন্দর, যশবিন্দর, নভজিৎরা স্পস্ট জানাচ্ছেন, ‘কৃষকেরা দেশ বাঁচাতে বেরিয়েছেন। সময় তো লাগবেই। মোদিজিকো আব খুন সে লিখেঙ্গে চিঠঠি।’