স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

চোখের কোন কোন সমস্যা ফেলে রাখা যাবে না? 

January 16, 2021 | 2 min read

দশ মাস ধরে ভোগাচ্ছে করোনা। তারই মধ্যে জীবনযুদ্ধ চলছে। কিন্তু করোনার ভয়ে জটিল রোগ সত্ত্বেও অনেকে হাসপাতালমুখো হচ্ছেন না। নিঃশব্দে বাড়ছে পুরনো অসুখ। যে কোনও সময় বড় বিপদ হতে পারে।

চোখের কী কী অসুখ ফেলে রাখা উচিত হবে না?

ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি—দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়ছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথিতে আক্রান্তের সংখ্যা। এই অসুখে রেটিনার উপর শিরা তৈরি হয়। সঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নিলে সেই শিরা ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। অন্ধ হয়ে যেতে পারেন রোগী। তাই এই রোগাক্রান্তদের নিয়মিত চিকিৎসার আওতায় থাকতে হয়। প্রয়োজনে লেজার সার্জারি করতে হবে। তাহলেই রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই অসুখ থাকলে রোগ ফেলে রাখবেন না। অবিলম্বে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিন।

রেটিনাল ডিটাচমেন্ট—কিছু মানুষের রেটিনা ছিঁড়ে যায়। এই সমস্যারই নাম রেটিনাল ডিটাচমেন্ট। হঠাৎ করে চোখে কম দেখাই এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। মাইনাস পাওয়ার থাকা মানুষের এই রোগ বেশি হয়। রেটিনাল ডিটাচমেন্টের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। অপারেশন করতে হয়। দেরি হলে দৃষ্টিশক্তির খুব বেশি উন্নতি করা সম্ভব হয় না। মুশকিল হল, ভুক্তভোগীরাও সমস্যা দেখা দেওয়ার এক-দুই মাস পরে চিকিৎসকের কাছে আসছেন। এমনটা করলে কিন্তু বিপদ বাড়বে।

চোখে স্ট্রোক— উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডস-এর মাত্রা বেশি থাকা, এইসব কারণে চোখে স্ট্রোক হতে পারে। এই সমস্যার প্রধান লক্ষণ হল চোখে কম দেখা ও যন্ত্রণা। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চোখে ইঞ্জেকশন দিতে হয়। তখনই কিছুটা দৃষ্টিশক্তি ফেরে। 

ছানি— এখন ছানি অপারেশনের ক্ষেত্রে ফেকো সার্জারি করা হয়। খুব সুরক্ষিত এই সার্জারিতে সহজেই ছানির সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তবে মুশকিল হল, ছানি পেকে গেলে ফেকো করার সময় নানা জটিলতা আসতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দৃষ্টিশক্তিও। এছাড়া এক ধরনের ছানি আছে যা সম্পূর্ণ সাদা হয়ে যায়। এই ছানি পাকলে ফেটে গিয়ে ফেকোলাইটিক গ্লকোমা হয়। চোখে অসহ্য ব্যথা নিয়ে রোগী হাসপাতালে আসেন। এই ধরনের অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি এড়াতে চাইলে  চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ক্যাটারাক্ট সার্জারি করিয়ে নিতে হবে। 

বাচ্চাদের মাইনাস পাওয়ার বৃদ্ধি—‌ এমনিতেই ছোটদের মায়োপিয়া, অর্থাৎ মাইনাস পাওয়ার দ্রুত বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। এর উপর লকডাউনে অনলাইন শিক্ষার সুবাদে মোবাইল ও কম্পিউটারের স্ক্রিন টাইম অনেকটাই বেড়েছে। ফলে পাওয়ার বাড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। 

মুশকিল হল, পাওয়ার বাড়ার পরও কম পাওয়ারের চশমা পরে দেখতে থাকলে পাওয়ার আরও দ্রুত বাড়ে। তাই কোনওভাবে যদি বুঝতে পারেন যে চশমা পরার পরও বাচ্চার দেখতে সমস্যা হচ্ছে, তাহলে আর দেরি নয়। হাসপাতালে এসে পাওয়ার চেক করিয়ে নিন।

যখন চিকিৎসা চাই-ই চাই

  • চোখে কোনও জোরদার আঘাত লাগলে, কিছু ঢুকে গেলে, অ্যাসিড বা অন্য কোনও রাসায়নিক পড়লে, রক্তপাত হলে ইত্যাদি। 
  • হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে।
  • চোখে হঠাৎ ব্যথা হলে।
  • সার্জারি বা ইঞ্জেকশনের তারিখ ঠিক করা থাকলে।
  • গ্লকোমা, ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি বা চোখের অন্য কোনও জটিল অসুখ থাকলে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে চিকিৎসা না করালে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#treatment, #Eye Disease

আরো দেখুন