খেজুরিতে তৃণমূলের সভায় বিশাল ভিড়
দলবদলুদের ভিড়ে আদি বিজেপি নেতা-কর্মীরা হারিয়ে যাচ্ছেন। আইপিএল কিংবা আইএসএলের নিয়ম অনুযায়ী, বাইরের চারজন প্লেয়ার নিয়ে খেলতে হয়। কিন্তু, বিজেপির পুরো টিমটাই তো বাইরের লোকজন নিয়ে করেছে। তাতে আদি বিজেপি (BJP) কর্মীরা সাইডলাইনে চলে গিয়েছেন। মঙ্গলবার খেজুরির বিদ্যাপীঠ মাঠে এক দলীয় সভায় এভাবেই বিজেপির আদি ও নব্য গোষ্ঠীর সংঘাত নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। এদিন ওই সভায় যাওয়ার পথে খেজুরির বারাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের মালদা এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে উঠে। নিরাপত্তার কারণে কলাগেছিয়ায় কিছুক্ষণ মদন মিত্রকে অপেক্ষা করার আবেদন জানায় পুলিস। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সশস্ত্র বাহিনীর ঘেরাটোপে মঞ্চে যান মদনবাবু। তিনি ছাড়াও জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, জেলা যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি, জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা কোঅর্ডিনেটর শেখ সুপিয়ান এবং মামুদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মদনবাবু (Madan Mitra) সভায় বলেন, তৃণমূলের এঁটো, পচা এবং উচ্ছিষ্টদের নিয়ে দল ভারী করছে বিজেপি। তৃণমূল (Trinamool) যাদের ফেলে দিয়েছে তাদের কুড়াচ্ছে বিজেপি। এই বিজেপি স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড আটকে দিচ্ছে। নার্সিংহোমকে চমকে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডে চিকিৎসা না করার কথা বলছে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকা সত্ত্বেও ভর্তি না নিলে লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া হতে পারে। নিজে দেখেছি, অনেক মা, বোন পরিবারের সদস্যের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করার জন্য হাতের বালা, আংটি, সোনার দুল বিক্রি করার কাতর আর্জি জানাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকের জন্য স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা এনে দিয়েছেন। বিনা পয়সার যাবতীয় অপারেশন, চিকিৎসা করানো যাবে। আর এতেই জ্বলছে বিজেপি। তাই ওরা স্বাস্থ্যসাথী আটকে দিতে মরিয়া।
দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে মদন মিত্র বলেন, আমি মরতেও প্রস্তুত। কিন্তু, কোনওদিন তৃণমূলের সঙ্গে বেইমানি করব না। এবার নন্দীগ্রাম থেকে সরকার চলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) স্বয়ং নন্দীগ্রাম বিধানসভার প্রার্থী। তাঁর হাত ধরে এই এলাকায় অনেক উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে ওই তৃণমূল নেতা বলেন, মোদি(MODI) শব্দের অর্থ হল, ‘মার্ডারার অব ডেমোক্রেসি ইন ইন্ডিয়া’। আমরাতো মরেই আছি। বেঁচে আছি কী? সেইসঙ্গে তাঁর যোগ, সুপ্রিম কোর্টের কাছে বিজেপির কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। কারণ, কৃষি আইন স্থগিত রাখার আদেশ না দিলে আগামী ২৬জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তুলতে পারতেন না। আন্দোলনরত কৃষকরা সেটা আটকে দিতেন। এদিনের সভায় সৌমেনবাবু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রাম বিধানসভা থেকে লড়াই করবেন। তাঁর এই ঘোষণা গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে। জেলা সর্বস্তরের মানুষ এতে অহঙ্কারবোধ করছেন। কোনও সন্দেহ নেই, তিনি তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। সোমবারের ভোট পূর্ববর্তী সমীক্ষায় স্পষ্ট, ক্ষমতায় ফিরবে তৃণমূল। আমরা গর্বিত, এই জেলায় মুখ্যমন্ত্রীকে একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে পাব। তিনি বলেন,
২০১৬সালে যিনি খেজুরি (Khejuri) বিধানসভা থেকে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী হয়েছেন তিনি এখন দোলাচলে রয়েছেন। তাঁকে কখনও বিজেপির সভার ধারেকাছে দেখা গিয়েছে। তাই এখানকার বিধায়কের উদ্দেশে বলব, অবস্থান স্পষ্ট করুন। দু’নৌকায় পা দেওয়ার পরিণাম কী, তা নিশ্চয়ই জানেন। আশা করব, এব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।