পশ্চিমবঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দেওয়াই চ্যালেঞ্জ বিজেপির
বাংলা দখলের দাবি করলেও রাজ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলানোই এই মুহূর্তে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ বিজেপির কাছে। এবং এর জেরেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে গভীর উদ্বেগে রয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগামী ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি ফের দু’দিনের সফরে বাংলায় যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ৩০ জানুয়ারি রাজ্যে এসেই প্রথমে তাঁর নবদ্বীপে ইসকনের মন্দিরে পুজো দেওয়ার কথা। সেখান থেকে হেলকপ্টারে বনগাঁর ঠাকুরনগরে মতুয়াদের সভায় যোগ দেবেন তিনি। রাতে নিউটাউনের এক অভিযাত হোটেলে রাত কাটাবেন। পরের দিন, ৩১ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাওড়ার ডুমুরজলায় সভা করবেন। সেখানেই ভিনদল থেকে আসা একাধিক নেতার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা। সব শেষে উলুবেড়িয়ায় রোড শো করবেন তিনি।
আসন্ন বাংলা সফরের আগে বুধবার রাজ্যের পাঁচটি জোনের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেছেন অমিত শাহ। পশ্চিমবঙ্গে দলের সাংগঠনিক হালহকিকত খতিয়ে দেখতে ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজেপির (BJP) সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও (JP Nadda)। বৈঠকে বাংলার তৃণমূলস্তরের দলীয় সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। দলীয় সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই স্পষ্ট হয়েছে যে, রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বাংলায় আদি এবং নব্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল সামাল দেওয়াকেই অন্যতম প্রধান ইস্যু বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ইতিপূর্বে একাধিকবার বাংলায় গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ বিজেপির জন্য আসন জয়ের ‘টার্গেট’ স্থির করেছিলেন। দলীয় বৈঠকে বঙ্গ নেতৃত্বকে তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে ২০০টির বেশি আসনে জয়লাভ করতে হবে গেরুয়া শিবিরকে। সেই লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করার নির্দেশও দিয়েছেন অমিত শাহ। এবং রাজ্যের একেবারে তৃণমূলস্তরের (Trinamool) সাংগঠনিক রিপোর্ট পেতে রাজ্যকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে নিয়োগ করেছেন পাঁচজন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক।
কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের মধ্যে একজন বিজেপির অন্যতম কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক। বাকি চারজন বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সম্পাদক। গত নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাস জুড়ে এই পাঁচজন বাংলায় এসে প্রতিটি জোনের আওতায় থাকা বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি এবং সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। খতিয়ে দেখেছেন সংশ্লিষ্ট জেলার সাংগঠনিক পরিস্থিতি। তৈরি করেছেন রিপোর্ট। সেই রিপোর্টই এদিন তাঁরা তুলে দিয়েছেন অমিত শাহের হাতে। জানা যাচ্ছে, এই রিপোর্ট হাতে নিয়েই চলতি মাসের শেষে বাংলায় যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রিপোর্ট মেনেই অমিত শাহের বঙ্গ সফরে চূড়ান্ত হতে চলেছে বিজেপির ভোটনীতি। গোষ্ঠীকোন্দলের পাশাপাশিই মতুয়া ইস্যু, উত্তরবঙ্গের গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন, কামতাপুর পিপলস পার্টির মতো সংগঠনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষার এজেন্ডাও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বলে খবর। তাঁদের সম্মিলিত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই পশ্চিমবঙ্গের প্রার্থীতালিকা তৈরির কাজে হাত দেবে বিজেপি।