পেট্রলের সেঞ্চুরি, কেন্দ্রকে নিশানা বিরোধীদের
ব্র্যান্ডেড পেট্রলের দাম আগেই ১০০-এর গণ্ডি ছাড়িয়েছে। বুধবার সাধারণ (রেগুলার) পেট্রলের দরও লিটার পিছু ১০০ টাকা ছাড়িয়ে গেল। দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি ‘ভ্যাট’ আদায় করা রাজস্থানে এই জ্বালানির নতুন দাম হয়েছে লিটার প্রতি ১০০.১৩ টাকা। ফলে এই প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকাল পেট্রল (Petrol)। আর তা নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করতে ২০১২ সালে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) একটি ট্যুইটকে ঢাল করেছে বিরোধীরা।
এই নিয়ে টানা ন’দিন বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম। বুধবার দুই জ্বালানির দর লিটারে ২৫ পয়সা করে বেড়েছে। ফলে রাজধানী দিল্লিতে পেট্রলের দাম লিটার প্রতি ৮৯.৫৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ডিজেল (Diesel) ৭৯.৯৫ টাকা। এদিন মুম্বইয়ে এই দুই জ্বালানির দাম হয়েছে যথাক্রমে ৯৬ এবং ৮৬.৯৮ টাকা। বাকি দুই মেট্রো শহর কলকাতা ও চেন্নাইয়ে পেট্রলের দাম বেড়ে যথাক্রমে ৯০.৭৮ এবং ৯১.৬৮ টাকা হয়েছে। ওই দুই শহরে ডিজেলের নতুন দর যথাক্রমে ৮৩.৫৪ এবং ৮৫.০১ টাকা।
এদিনের মূল্যবৃদ্ধির জেরে রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর শহরে এক লিটার পেট্রল মিলেছে ১০০.১৩ টাকায়। গতকালই মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় ব্র্যান্ডেড পেট্রলের দাম লিটারে ১০০ টাকা ছাড়িয়েছিল। কিন্তু, এই প্রথম সাধারণ পেট্রলের দামও একশোর গণ্ডি ছাড়াল। এদিন শ্রীগঙ্গানগরে ডিজেলের নতুন দাম হয়েছে প্রতি লিটারে ৯২.১৩ টাকা। জ্বালানির দাম আকাশ ছুঁতেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন মোদি সরকারকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস বলেছে, ইউপিএ আমলে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল পিছু ১০৮ ডলার হলেও দিল্লিতে পেট্রল বিক্রি হয়েছে ৭১.৫১ টাকায়। এ প্রসঙ্গে ২০১২ সালে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী মোদির ট্যুইটকে ঢাল করেছে বিরোধীরা। ওই বছর পেট্রলের ব্যাপক দাম বৃদ্ধির জন্য ইউপিএ সরকারকে দায়ী করেছিলেন তিনি। ট্যুইটারে লিখেছিলেন, ‘কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের ব্যর্থতার উজ্জ্বল উদাহরণ হল, পেট্রলের এই ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি। এর ফলে গুজরাতের কয়েক কোটি বাসিন্দার উপর বোঝা চাপবে।’
তবে বিরোধীরা যাই বলুক, জ্বালানির এই দাম বৃদ্ধিকে পাত্তা দিতে নারাজ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে উল্টে আগের সরকারের উপরই তিনি দায় চাপিয়েছেন। বুধবার ভোটমুখী তামিলনাড়ুতে তেল ও গ্যাসের একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে পেট্রল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কি এতটাই (জ্বালানি ক্ষেত্রে) আমদানি নির্ভর হওয়া উচিত? আমি কারও সমালোচনা করতে চাই না। আমি শুধু বলতে চাই, এ বিষয়ে যদি আমরা আগে থেকে গুরুত্ব দিতাম, তাহলে আমাদের মধ্যবিত্তের উপর এই বোঝা চাপত না।’ তাঁর দাবি, ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে দেশের প্রয়োজনের ৮৫ শতাংশের বেশি তেল আমদানি করেছে ভারত। আর গ্যাসের ক্ষেত্রে তা ৫৩ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে গত ন’দিনে লিটার পিছু পেট্রলের দাম বেড়েছে ২.৫৯ টাকা। আর ডিজেলে ২.৮২ টাকা। বিভিন্ন রাজ্যে পেট্রল ও ডিজেলের দামের তারতম্য নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির আরোপ করা ভ্যাট ও পরিবহণ শুল্কের উপর। খুচরো পেট্রল বিক্রি করে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কর আদায় করে কেন্দ্র ও রাজ্য। ডিজেলের ক্ষেত্রে তার পরিমাণ ৫৪ শতাংশের বেশি।