হচ্ছে টা কী? বিভাগে ফিরে যান

বঙ্গ বিজেপিতে আমরা-ওরা – আদিদের চ্যালেঞ্জ নব্যদের?

March 4, 2021 | 2 min read

রাজ্যে বাম শাসনের শেষদিকে ‘আমরা-ওরা’ শব্দবন্ধ ছিল বহুল আলোচিত। তৎকালীন শাসক দল এবং তাদের তাবেদাররা এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করত শাসক এবং বিরোধী বোঝাতে। প্রায় ১০ বছর পর আবার রাজ্য রাজনীতিতে ফিরে এসেছে সেই শব্দবন্ধ। তফাত— এ বার সেই আওয়াজ নাকি উঠেছে বিজেপি দলের অন্দরে। ।

রাজ্যে বিধানসভা ভোটের (West Bengal Assembly Election 2021) আগে দলের অন্দরের ‘অস্বস্তি’ কিছুতেই কাটছে না বিজেপি-র। যত ভোটের টিকিট দেওয়ার সময় এগিয়ে আসছে, ততই সেই ‘অস্বস্তি’ প্রকাশ্যে এসে পড়ছে বলে বাজারে জোড় খবর। গুজব উঠেছে যে এর মূলে রয়েছে চিরাচরিত আদি-নব্য দ্বন্দ্ব এবং সেই সূত্রে কোন কোন আসনে কারা কারা লড়বেন, সেই নিয়ে দাবি এবং জল্পনা। যদিও দিল্লি যা বলবে, সেটাই মেনে নিতে হবে। তবু ভিতরে ভিতরে যে একটা আওয়াজ উঠেছে, সেটা বিজেপির দলীয় শৃঙ্খলার পক্ষে খানিক অস্বস্তির বইকি।

বঙ্গ বিজেপি-তে আদি-নব্য বিবাদ অনেক দিন ধরেই চলছে। তৃণমূল ছেড়ে মুকুল রায় (Mukul Roy) গেরুয়া শিবিরে আসার পরে অনেক সময়ই তাঁর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের বিবাদ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। একাধিকবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দুই নেতাকে একসঙ্গে নিয়ে বসেছেন। একসঙ্গে চলার নির্দেশও দিয়েছেন। ভোটের আগে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দু’জনকে একসঙ্গে চলার নির্দেশ দিলেও ভিতরে ভিতরে চাপা টেনশনটা পুরোপুরি যায়নি। সেই সূত্রেই আবার এসে পড়েছে ‘আদি’ ও ‘নব্য’ ভাগাভাগির সমীকরণ। যার মূলে রয়েছে গত লোকসভা ভোটের আগে-পরের হিসাবনিকাশ।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮ আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। চলতি বাংলা হিসেবে সেই নির্বাচনের নিরিখে ১২১টি বিধানসভা আসনে তারা এগিয়ে রয়েছে। সেই সূত্রেই এখন রাজ্য বিজেপির ‘আদি’-দের একাংশ লোকসভা নির্বাচনের পরে যাঁরা দলে যোগ দিয়েছেন তাঁদের ‘নব্য’ হিসেবে ধরছেন। আর তাঁরাই আওয়াজ তুলছেন, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করা নেতাদেরই এগিয়ে থাকা ১২১টি আসনে প্রার্থী করা হোক। যাঁরা পরে এসেছেন এবং এর পরেও আসবেন, তাঁরা লড়ুন বাকি ১৭৩ আসনে। এবং জিতে দেখান!

বিজেপির ‘আদি’ নেতাদের বক্তব্য, যে সব এলাকায় বিজেপি (BJP) একাই জেতার মতো জায়গায় রয়েছে, সেখানে দলের নীতি আলাদা হোক। অনেক ক্ষেত্রে এমনও বলা হচ্ছে যে, তৃণমূল থেকে এমন অনেক নেতা বিজেপি-তে এসেছেন বা আসতে পারেন, যাঁদের সঙ্গে দলের কর্মীদের লড়তে হয়েছিল লোকসভা নির্বাচনে।

এই প্রশ্ন উঠেছিল পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনার সময়। তখন দলের একটা বড় অংশ প্রশ্ন তুলেছিলেন, আসানসোলে যখন বিজেপি পর পর দু’বার লোকসভা নির্বাচনে জিততে পেরেছে, তখন দলের এতটা ‘জিতেন্দ্র-নির্ভরতা’ কেন!

অনেকে এমনও বলেন যে, লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি কর্মীদের মূল লড়াইটাই ছিল জিতেন্দ্রর বিরুদ্ধে! যদিও সেই প্রশ্ন বা যুক্তিকে আমল দেননি বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। জিতেন্দ্র নিয়ে প্রকাশ্যে ‘দলের বিরোধী’ মন্তব্য করায় শো-কজ করা হয়েছিল সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল-সহ চার জনকে।

আদি-নব্য দ্বন্দ্বে আখেরে কোন পক্ষের লাভ, নাকি ফায়দা তুলবে তৃণমূল – তা সময়ই বলবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #‬ ‪‎West Bengal

আরো দেখুন