রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

একে গরম, তার ওপর বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, অগ্নিমূল্য পাতিলেবু

April 28, 2021 | 2 min read

তীব্র গরমে পাতিলেবুর (lemon0 জুড়ি মেলা ভার। দুপুরে ভাতের সঙ্গেই হোক বা লেবুর সরবত, এই সময় পাতিলেবুর চাহিদা থাকে তুঙ্গে। বর্তমান বাংলায় লেবুজল আবার নিম্বু-পানি বলেও বিক্রি হচ্ছে। তবে সামান্য লেবু জল খেতে গিয়েও পকেটে টান পড়ছে দুর্গাপুরের বাসিন্দাদের। কারণ এক পিস পাতিলেবুর বর্তমান বাজারদর ১৫ টাকা। আবার করোনাকালে শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চিকিৎসকরা পাতি লেবু খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন। যদিও প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারে কালঘাম ছুটছে আমজনতার। করোনা (Covid 19) আবহে দুর্গাপুরের বাজারগুলিতে পাতিলেবুর দর এক ধাক্কায় বেড়েছে পাঁচ গুণ। ফলে বাজারে চাহিদা থাকলেও দামের কারণে আমদানিও কমে গিয়েছে।

গ্রীষ্মকাল আসতেই স্বাভাবিকভাবে পাতিলেবুর চাহিদা প্রতিবছরই বাড়ে। কিন্তু আমদানি স্বাভাবিক থাকায় প্রতি পিস লেবু দুই থেকে তিন টাকা দরে বিক্রি হয়। দুর্গাপুরের মানুষ এই দামে লেবু কিনতে অভ্যস্ত। কিন্তু গত বছর করোনা সংক্রমণের পর থেকেই বদলাতে শুরু করে সাধারণ মানুষের খাদ্যতালিকা। রোগ প্রতিরোধক শক্তি বাড়াতে চিকিৎসকরা ভিটামিন-সি জাতীয় ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন। পাতিলেবু, মোসাম্বি, কমলা ও বাতাবি লেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি থাকে। তবে এই মরশুমে পাতিলেবুর ফলন বেশি হয়। এছাড়া সস্তায় পাওয়া পাতিলেবুর উপরই ভরসা করেন মধ্যবিত্তরা। কারণ অন্যান্য লেবুর দাম এই সময় অনেকটাই চড়া থাকে।

মূলত, তামিলনাড়ু থেকে পাতিলেবু আমদানি হয় এই রাজ্যে। গত বছর লকডাউন থাকায় পরিবহণ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ছিল না। ফলে পাতিলেবুর দাম সামান্য বেড়েছিল। কিন্ত করোনা চলতি বছরে যেমন ভয়াবহ আকার নিতে থাকে, তেমনই দফায় দফায় পাতিলেবুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। দুর্গাপুরের গ্রামীণ এলাকাতেও একটি পাতিলেবুর দাম ১০ টাকা। শহরে তা বিকচ্ছে ১৫ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, লেবুর চাহিদা বাড়লেও আমদানি কমে গিয়েছে। আগামী দিনে দাম আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে।

বেনাচিতি বাজারের এক প্রবীণ ক্রেতা সুবীর মিশ্র বলেন, করোনার জন্য শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পাতি লেবু খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাই পরিবারের সকল সদস্য মিলে প্রতিদিনই লেবু খাচ্ছি। কিন্তু কখনও পাতিলেবুর দাম এত চড়া হতে দেখিনি। বেনাচিতি বাজারে লেবুর এক খুচরো ব্যবসায়ী সঞ্জিত মাহাত বলেন, পাতিলেবুর চাহিদার জন্য মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। এত চড়া দামে এই প্রথম লেবু বিক্রি করছি। ক্রেতারা একটি লেবুর দাম শুনেই চোখ কপালে তুলছেন।

বেনাচিতি বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সুভাষ দাস বলেন, তামিলনাড়ু থেকে লেবু আমদানি হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ভিনরাজ্যগুলিতে হু হু করে বাড়তে থাকায় সেখানেও পাতিলেবুর চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। খবর নিয়ে জানতে পেরেছি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ সহ ভিনরাজ্যে লেবু বেশি রপ্তানি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই চাহিদা থাকলেও এই রাজ্যে আমদানি কমে গিয়েছে। সেই কারণে লেবুর দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। প্রতিদিন দুর্গাপুরের বাজারগুলিতে আমি প্রায় ১০ হাজারের বেশি লেবু বিক্রি করি। আমাদের চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। যদিও এই দাম শুনে বাজারে অনেকেই বলছেন পাতিলেবু আর ‘পাতি’ নেই, এখন মহার্ঘ্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#covid19, #lemon

আরো দেখুন