রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

নির্বাচন পরবর্তী হিংসার জন্য দায়ী বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যই?

May 4, 2021 | 2 min read

বিজেপি নেতা আর বিতর্কিত মন্তব্য কথা দুটো বঙ্গ রাজনীতিতে প্রায় সমার্থক। এই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি একপ্রকার ধরেই নিয়েছিল তারা ক্ষমতায় আসছে। আর সেই ভেবেই স্পর্ধার খোলা আকাশে বাঁধাহীনভাবে উড়েছেন বিজেপি নেতারা। ক্ষমতায় এলে কী কী ভাবে বদলা নেবেন তা জনগণকে বোঝাতে ছাড়েননি কোন নেতাই।

দেখে নেওয়া যাক কোন বিজেপি (bjp) নেতা ভোটের আবহে কী হুমকি দিয়েছেন, বিজেপির এক স্থানীয়স্তরের নেতা শ্যামল রায় এক নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের এবং রাজ্যের পুলিশকে হুমকির সুরে বলেন, ‘আমরা সংযত রয়েছি। কিন্তু যদি জেলা সভাপতি নির্দেশ দেন, তাহলে তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণ করতে পারি। তবে প্রথম মারব পুলিশকে।’

শীতলকুচির ঘটনার পরেই বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘আমি সায়ন্তন বসু বলে যাচ্ছি। বেশি খেলতে যেও না, শীতলকুচির খেলা খেলে দেব। আনন্দ বর্মনকে মারার চার ঘন্টা পরেই চারটে লাশ পড়ে গেল। শোলে ছবিতে একটা ডায়লগ আছে তোমরা একটা মারলে আমরা চারটে মারব, শীতলকুচিতে তাই ঘটেছে।’

এরপরেই শীতলকুচির (Sitalkuchi) ঘটনা নিয়ে হুমকির সুরে কথা বলতে শোনা যায় রাহুল সিনহাকে। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর হামলা হলে গুলি চলবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উচিত ছিল শীতলকুচিতে ৮জনকে গুলি করে মারা ।’ অর্থাৎ প্রকাশ্যে রাহুল সিনহা মেনে নেন আত্মরক্ষায় নয়, প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়েই গুলি চালানো হয়েছিল শীতলকুচিতে।

এরপর খুব স্বাভাবিকভাবেই এসে যায় দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নাম। বিতর্ক থাকবে আর দিলীপ বাবু থাকবেন না তা কী কখনো হয়! শীতলকুচি প্রসঙ্গেই প্রকাশ্য জনসভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বাড়াবাড়ি করলে জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’ এই মন্তব্যে একপ্রকার হুমকির গন্ধ পান বিরোধীরা।

এখানেই শেষ নয়। নির্বাচনী জনসভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘গেরুয়া শিবিরের এক নেতার উপর হামলার বদলা নিতে চারজন তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে টার্গেট করবে বিজেপি।’

২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগাদ যখন সিএএ বিরোধী আন্দোলনে উত্তাল গোটা রাজ্য। সেইসময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি মন্তব্য করেন, ‘সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে গুলি করে মারা উচিত। অসম -উত্তরপ্রদেশ-কনার্টকে করে দেখিয়েছে বিজেপি শাসিত সরকার। এখানেও সেটাই হওয়া উচিত।’

ক্ষমতায় এলে তাঁরা কী কী করবেন তারও একপ্রকার তালিকা দিয়ে দেন দিলীপ বাবু। বলেন, ‘আমরা এলে লাঠি মারব, গুলি করব, জেলে পাঠাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ক্ষমতা নেই।’

এমনকী পুলিশকে হুমকি দিয়ে এও বলেন, ‘‌পুলিশকে আমাদের পায়ের তলায় থেকে চাকরি করতে হবে। সময় পালটাচ্ছে, ২ মে’র পর তা আরও পালটে যাবে। যাঁরা এখনও চমকাচ্ছেন-ধমকাচ্ছেন, তাঁরা ভেবে দেখুন, ২ তারিখের পর কোথায় যাবেন?’

একটু পিছনে গেলে দেখা যাবে ২০১৯- এর লোকসভা ভোটের আগে সায়ন্তন বসু বলেছিলেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে বলে দেব, কেন্দ্রীয় বাহিনী পায়ে নয় যেন বুকে গুলি করে।’

শীতলকুচিতে ঠিক এটাই ঘটেছিল। যারা ক্ষমতায় না থেকেও হুমকি দিয়ে সেই কাজ হাসিল করতে পারে, তারা ক্ষমতায় এলে ঠিক কী কী করতে পারে, সেই অশনি সংকেত হয়তো আগেই পেয়েছিল বাংলার মানুষ। আর তাই আজ এই ফলাফল। মোদির বিজয়রথের চাকা আটকালো বাংলা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #bjp

আরো দেখুন