দেশ বিভাগে ফিরে যান

আর কয়েক ঘন্টা পরেই গুজরাতে আছড়ে পড়বে তাউকত

May 17, 2021 | 2 min read

ক্রমশই শক্তি বাড়াচ্ছে আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় তাউকত। ইতিমধ্যে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। কেরল, কর্ণাটক ও গোয়ায় ফুঁসছে সমুদ্র। মোট ছ’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। কয়েকশো বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি ও গাছ। নিচু এলাকাগুলি থেকে মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে জোরকদমে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও শক্তি বাড়িয়ে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে তাউকত। মঙ্গলবার ঢোকার কথা থাকলেও আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ, সোমবার সন্ধ্যাতেই গুজরাত উপকূলে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। গুজরাত, দমন ও দিউতে হলুদ সতর্কবার্তা জারি করেছে মৌসম ভবন।

শুরু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি এবং ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার গতিতে ঝোড়ো হাওয়া। পূর্বাভাস অনুযায়ী মঙ্গলবারের মধ্যে ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ গতি পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১৭৫ কিমি। গুজরাতের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ইতিমধ্যেই শীর্ষ আধিকারিক ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি। তিনি করোনা আবহে ‘জিরো ক্যাসুয়ালিটি’ মনোভাব গ্রহণ করতে বলেছেন। নিম্নচাপের জেরে সৌরাষ্ট্র, কচ্ছ, দিউয়ের উপকূলবর্তী অংশে ব্যাপক বৃষ্টি চলবে। তামিলনাড়ু উপকূলেও সমুদ্রের বিশাল ঢেউ দেখা দিয়েছে।

কেরলের পর রবিবার সকাল থেকে কর্ণাটকে শুরু হয়ে গিয়েছে ঝড়ের তাণ্ডবলীলা। ৭৩টি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। রাজ্যের যে ছ’টি জেলায় ঝড়ের দাপট সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে তিনটি উপকূলবর্তী ও তিনটি পশ্চিমঘাট পর্বত সংলগ্ন। চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্ণাটক প্রশাসন। রাজ্যের ২৮৬টি জায়গায় প্রায় ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় উপকূলের জেলাগুলির ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। সেখানে তিনি উদ্ধারকাজের পাশাপাশি ত্রাণ বণ্টনের উপর জোর দিয়েছেন। কর্ণাটকেরর স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোমানি বলেছেন, রাজ্যের উপকূলে তাউকত আংশিক ভাবে আঘাত হেনেছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। এক হাজার মানুষ ২৪ ঘণ্টা জরুরি ভিত্তিতে কাজ করছে।  বেলা বাড়তেই গোয়ায় ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি। যার জেরে বহু এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। মৌসম ভবন জানিয়েছে, ঝড়ের শক্তি অনুমান করার জন্য আগামী ১২ ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করেছেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত।

করোনায় বিধ্বস্ত মহারাষ্ট্র। এই অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সতর্ক উদ্ধব থ্যাকারে প্রশাসন। রাজ্যের পালঘর, রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গের মতো উপকূলীয় জেলায় ঝড়ের তীব্রতা বাড়তে পারে। এই অবস্থায় রবিবার দুপুরে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, দমন ও দিউ এবং দাদরা নগর হাভেলি প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট কমিটির বৈঠক ডাকেন ক্যাবিনেট সেক্রেটারি রাজীব গৌবা। বিপর্যয় মোকাবিলায় রাজ্যগুলি কতটা প্রস্তুত, সে বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নেন। শনিবার সন্ধ্যায় শীর্ষ আধিকরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সেখানে ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত পাঁচ রাজ্যে রোগীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, ভ্যাকসিনের কোল্ড চেইন, বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ, টিকা এবং করোনা চিকিৎসার ওষুধ ও সরঞ্জাম যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার উপর জোর দেন।


পাঁচ রাজ্যেই কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ইতিমধ্যেই ৫৩টি থেকে বাড়িয়ে ১০০টি দল উপদ্রুত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি তৈরি রয়েছে বায়ুসেনা ও নৌবাহিনী। ১৬টি বিশেষ বিমান ও ১৮টি হেলিকপ্টারকে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে নৌবাহিনী কেরলে উদ্ধারে নেমে পড়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#gujarat, #cyclone, #Super Cyclone, #taukat

আরো দেখুন