রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

শক্তি বাড়িয়ে বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে যশ

May 23, 2021 | 2 min read

মিলে গেল পূর্বাভাস। আন্দামান সাগর ও বঙ্গোপসাগরে তৈরি হল নিম্নচাপ। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেটি শক্তি বাড়িয়ে পরিণত হবে খুব তীব্র মাত্রার বা তার থেকেও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ। এগিয়ে আসবে বাংলার দিকেই। অন্তত তেমনই সম্ভাবনার কথা শনিবার জানিয়েছে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর। আগামী ২৬ মে, বুধবার সেটি রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কতাও দেওয়া হয়েছে। গত বছর ঠিক এই সময়েই দক্ষিণবঙ্গকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় আম্পান। স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ার আগে তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫৫ কিলোমিটার। সেদিক থেকে ‘যশ’ আম্পান কেও ছাপিয়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর শনিবার আরও জানিয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের মূল অভিমুখ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল। আগামী ২৬ মে, বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ ও তার সংলগ্ন বাংলাদেশ এবং উত্তর ওড়িশা উপকূলে এটি আছড়ে পড়তে চলেছে। উত্তর আন্দামান সাগর ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হয়ে গিয়েছে এদিনই। আজ, রবিবার সকালে সেটি শক্তি  বাড়িয়ে গভীর থেকে অতি গভীর নিম্নচাপের আকার  নেবে। সোমবার সেই অতি গভীর নিম্নচাপ আরও শক্তি সঞ্চয় করে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এ পরিণত  হবে। পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সেটি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে আকার নেবে অতি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের। তার জেরে মঙ্গলবার দুপুর থেকেই উত্তর ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ এবং সংলগ্ন বাংলাদেশ উপকূলে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে। উপকূল এলাকায় ঝড়ের গতিবেগ ঘন্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। তারপর সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে।


উপকূল অতিক্রম করে স্থলভূমিতে ঢোকার সময় ঝড়ের গতিবেগ কত হতে পারে সেব্যাপারে এদিন নীরব ছিল আবহাওয়া দপ্তর। একই ভাবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থলটি উপকূলের কোন এলাকা দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকবে সেটাও এদিন রাত পর্যন্ত বলা হয়নি। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে হালকা-মাঝারি থেকে ভারী-অতি ভারী মাত্রার বৃষ্টি শুরু হবে। পরের দিন রাজ্যের অন্য অনেক জেলায় একইরম বৃষ্টিপাত হতে পারে। বাদ যাবে না উত্তরবঙ্গও। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা জি সি দাস জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টির ব্যাপ্তি বড় হবে। ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে এটি আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল এখনও জানা যায়নি। এর আগে আইলা এবং আম্পানের ক্ষেত্রে কেন্দ্রস্থল ছিল যথাক্রমে সাগরদ্বীপ এবং বকখালি। এবার ‘যশ’-এর কেন্দ্রস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগনা না পূর্ব মেদিনীপুর, কোথায় হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে আগামী সোমবারের মধ্যেই বিষয়টি বলা সম্ভব হবে।


আম্পানের থেকেও কি বিধ্বংসী হবে ‘যশ’? এটাই এখন সাধারণ মানুষের মনে সবথেকে বড় প্রশ্ন। আবহাওয়াগত বিচারে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬৬ কিলোমিটার অতিক্রম করলেই সেটিকে অতি তীব্র তকমা দেওয়া হয়। আর ঘণ্টায় ১১৮ কিলোমিটার গতিবেগ পার করলেই সেটিকে বলা হয় খুব তীব্র ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর ঝোড়ো হাওয়ার যে প্রকৃতি দিচ্ছে, তাতে স্পষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ আম্পান-এর সমকক্ষ। তাই প্রশাসনিক মহলে জোর তৎপরতা চলছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#cyclone, #amphan, #yaas

আরো দেখুন