দেশ বিভাগে ফিরে যান

ব্ল্যাক এবং হোয়াইটের পর এবার ইয়েলো ফাঙ্গাসের আত্মপ্রকাশ

May 25, 2021 | 2 min read

দেশজুড়ে বাড়তে শুরু করেছে ব্ল্যাক ও হোয়াইট ফাঙ্গাসের সংক্রমণ। দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে এবার সামনে এল ইয়েলো ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের এক ব্যক্তি এই হলুদ ছত্রাকে সংক্রামিত হয়েছেন বলে রিপোর্ট।

চিকিৎসকদের দাবি, ব্ল্যাক ও হোয়াইট ফাঙ্গাসের থেকে বেশি ভয়াবহ ইয়েলো ফাঙ্গাস। বেশি প্রাণঘাতীও। কারণ এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রমণ করে। যদিও এরইমধ্যে এইমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়ার সতর্কবার্তা, রঙের ভিত্তিতে ফাঙ্গাস বা ছত্রাক সংক্রমণের নামকরণ ‘ধন্দ’ তৈরি করতে পারে।


সোমবার গাজিয়াবাদ থেকে ইয়েলো ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ঘটনা সামনে এল। আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বৃজপাল ত্যাগীর হাসপাতালে। ইয়েলো ফাঙ্গাসের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে আলস্য, ওজন ও খিদে কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর ধীরে ধীরে আরও গুরুতর উপসর্গ তৈরি হয়। বিভিন্ন ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ বেরতে শুরু করে। সংক্রমণ তৈরি হয় চোখেও। শরীরের কোষগুলি মরতে শুরু করে। বিকল হতে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। প্রাণঘাতী হওয়ায় উপসর্গ দেখা দেওয়া মাত্রই চিকিৎসকদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই রোগের চিকিৎসার জন্য অ্যাম্ফোটেরিসিন বি ইঞ্জেকশন দরকার। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের কারণে এই রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বেশি। তবে ফাঙ্গাস সংক্রমণের নামকরণ নিয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিলেন এইমস প্রধান গুলেরিয়া। তাঁর বক্তব্য, করোনা রোগীদের শরীরে ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে বিভিন্ন নাম দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে ভুল বোঝাবুঝি ও ধন্দ তৈরি হতে পারে। শুধুমাত্র রঙের ভিত্তিতে ফাঙ্গাসের নামকরণ বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে। সাধারণভাবে তিন ধরনের ফাঙ্গাস আমরা দেখতে পাচ্ছি। মিউকরমাইকোসিস, ক্যান্ডিডা ও অ্যাসপারজিলোসিস। ডায়াবেটিস থাকা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করতে হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরকম আক্রান্তদের শরীরে মিউকরমাইকোসিস মিলছে। আর সাম্প্রতিক রিপোর্টগুলিতে ক্যান্ডিডা সংক্রমণকে হোয়াইট ফাঙ্গাস বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। সাধারণত দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতার রোগীরা এই ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। সর্বশেষ হল অ্যাসপারজিলোসিস। এটি ফুসফুসে প্রভাব ফেলছে। দেখা দিচ্ছে অ্যালার্জিও। এটিই হলুদ ফাঙ্গাস। কিন্তু, এগুলি সংক্রামক নয়। 


এরইমধ্যে দিল্লিতে প্রায় ৫০০ জন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আক্রান্ত হয়েছেন বলে সোমবার জানান মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর অভিযোগ, এই রোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় অ্যাম্ফোটেরিসিন বি ইঞ্জেকশন মিলছে না। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের চিকিৎসার জন্য লোকনায়ক হাসপাতাল, জিটিবি হাসপাতাল ও রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশালিটি হাসপাতলে বিশেষ কেন্দ্র গড়া হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ওষুধ ও ইঞ্জেকশন পাওয়া যাচ্ছে না। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে সোমবার মহামারী বলে ঘোষণা করল জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। পাশাপাশি, রাজস্থানের কোটার এমবিএস হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ৩০ জনেরও বেশি। চিকিৎসক রাজকুমার জৈন বলেন এই রোগে আক্রান্তরা প্রায় সবাই করোনা থেকে সেরে উঠেছিল। চিকিৎসাধীনরা মূলত কোটা ও আশপাশের জেলাগুলির বাসিন্দা। তবে মধ্যপ্রদেশ থেকেও কয়েকজন এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Yellow fungus

আরো দেখুন