তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেন অভিষেক
বিধানসভায় বড় জয়ের পর প্রথম বার সাংগঠনিক বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ দুপুর দু’টোয় তৃণমূল ভবনে ওই বৈঠক হয়। বৈঠকে আসতে বলা হয়েছিল দলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী ও পুরসভার চেয়ারম্যান তথা পুর প্রশাসকদের। শুক্রবার দলের তরফে নতুন নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়, দূরের জেলার জনপ্রতিনিধিদের আসতে হবে না। নির্বাচনের সময় থেকেই পুরসভাগুলি কার্যত প্রশাসকহীন হয়ে পড়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে দল কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। আজ দুপুর ২:১০ নাগাদ তৃণমূল ভবনে আসেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। কিছু সময়ের পরে এসে পৌঁছান দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। কিছুক্ষন পরেই শুরু হয় তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক। ছিলেন সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, ববি হাকিম, গৌতম দেব, অরূপ বিশ্বাস, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই বৈঠক শেষ হলে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকের বিশেষ সিদ্ধান্তগুলি জেনে নিন:
- যুব তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অভিষেক (Abhishek Banerjee) , নতুন সভাপতি হলেন সায়নী ঘোষ।
- দলে এক নেতা এক পদ কার্যকর করতে হবে বলে, বৈঠকে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
- বৈঠকে নেত্রীর কড়া নির্দেশ, কোনও মন্ত্রী গাড়িতে লালবাতির ব্যবহার করতে পারবেন না। দুর্নীতিতে যেন কারও নাম না জড়ায়, সাবধান করেন তিনি। কয়লা, বালি পাচার নিয়ে দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে যেন অভিযোগ না ওঠে। দুয়ারে ত্রাণ নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বচ্ছতা বজায় রেখে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হবে, কোনও অভিযোগ যেন না ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন তখন যা খুশি বলা যাবে না, নির্দেশ দেন মমতা।
- দলের সাংগঠনিক স্তরে বড় রদবদল করলেন মমতা। তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন যুব সভানেত্রী হলেন সায়নী ঘোষ। ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় শ্রমিক হলেন সংগঠনের সভাপতি। কাকলি ঘোষ দস্তিদার হলেন সর্বভারতীয় মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী। পূর্ণেন্দু বসুকে কিষান সংগঠনের সভাপতি করা হয়েছে।
- ৯টি জেলায় দলীয় সভাপতি পদে বড় রদবদল করা হল।
- রাজ্যে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক করা হল কুণাল ঘোষকে।
- তৃণমূলে রাজ্য সম্পাদকের পদে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের কালচারাল প্রেসিডেন্ট করা হল রাজ চক্রবর্তীকে। বঙ্গজননীর সভানেত্রী করা হয়েছে মালা রায়কে। বঙ্গজননীতে আনা হয়ে জুন মালিয়া ও লাভলি মৈত্রকে। শ্রমিক সংগঠনের সর্বভারতীয় সভানেত্রী করা হয়েছে দোলা সেনকে।
পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্শি, সুদীপ বন্দোপাধ্যায় এবং সৌগত রায়। একমাসের মধ্যে জেলা সংগঠনের রদবদল হবে এবং তা স্বয়ং করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠকে জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দলে ফিরতে চাওয়া নেতাদের নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি, এ বিষয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা, জানান সৌগত রায়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’-এর প্রস্তাব উত্থাপন তুলেছিলেন। তা পাশ হয়েছে। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। সুব্রত বক্সির জায়গায় দায়িত্বে এসেছেন অভিষেক। বৈঠকে মমতা বলেছেন মন্ত্রী বা জেলা সভাপতি – যে কোনও একটি পদে থাকতে হবে, জানান তিনি। বাংলার বাইরে তৃণমূলের বিস্তারের জন্য কাজ করা হবে। সাংসদরা কাজ চালিয়ে যাবেন, জানান তিনি। সুব্রত বক্সি জানান, আশিষ চক্রবর্তী, অসীম মাজি, বেচারাম মান্না এবং প্রদ্যুৎ ঘোষ, এই ৪ জন হয়েছেন রাজ্য সম্পাদক।