মুকুলের প্রস্থানের ফলে বড়সড় রদবদল বঙ্গ বিজেপিতে?
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপি ছেড়ে ‘ঘর ওয়াপসি’ করলেন মুকুল রায়। সপুত্র তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তিনি যোগ দিলেন তাঁর পুরোনো দলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের উপস্থিতিতে মুকুল (Mukul Roy) এবং শুভ্রাংশুর রায় (Subhranshu Roy) তৃণমূলে যোগ দিলেন।
এদিকে BJP-তে মুখে কুলুপ সকলেরই।মুকুল রায়ের নাম শুনেই ফোন কাটছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। এমনকী, অনেকেই সযত্নে প্রশ্ন এড়িয়ে বলছেন, ‘দল নির্দেশ দেওয়ার পরেই এই বিষয়ে কিছু বলব। হয়ত কাল থেকে প্রতিক্রিয়া দেওয়া শুরু করব।’ সংবাদ মাধ্যমকে BJP নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বললেন, ‘এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না’। অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষকে ফোন করেও সাড়া মেলেনি।
এরপরই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে বঙ্গ বিজেপি বড়সড় রদবদলের। মুকুলের চলে যাওয়ায় যে গেরুয়া শিবির বড় ধাক্কা পেয়েছে বলাই বাহুল্য। কিন্তু বঙ্গীয় নেতাদের আরও বেশি করে ভাবাচ্ছে এরপর সংগঠনের হাল কে ধরবেন।
সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে দিল্লি সফরে গিয়ে নিজের মাটি শক্ত করে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, শুভেন্দুকেই হয়তো বঙ্গ বিজেপির রাশ দেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের রাজ্য সভাপতি করা হতে পারে তাঁকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিপক্ষ হিসেবে এই প্রাক্তন তৃণমূল নেতার ওপরেই ভরসা দিল্লির।
কিন্তু তাহলে দিলীপ ঘোষের কী হবে? শুভেন্দুর সাথে তাঁর ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা এখন সর্বজনবিদিত। শুভেন্দুকে রাজ্য সভাপতি করা হলে দিলীপের মানভঞ্জন করতে হয়তো তাঁকে দিল্লিতে পুনর্বাসন দেওয়া হতে পারে। আসন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলে শিঁকে ছিঁড়তে পারে তাঁর। এমনটাই জল্পনা রাজনৈতিক মহলে।
পাশাপাশি, শুভেন্দুকে রাজ্য সভাপতি করলে বিরোধী দলনেতা কে হবেন সেই নিয়েও জল্পনা গেরুয়া শিবিরে। অনেকে মনে করছেন মুকুলকে এই পদ না দেওয়াতে তিনি ক্ষুণ্ন হয়েছিলেন, যার ফলে দলবদল করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন তিনি। অন্যদিকে শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হওয়ার ফলে ক্ষুব্ধ আদি বিজেপির একাংশ। সেক্ষেত্রে মনোজ টিগগাকে এই পদ দিয়ে আদি বিজেপি নেতাকর্মীদের বার্তা দিতে চায় দিল্লি।
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর যে বিজেপির পায়ের তলার মাটি নড়বড়ে হয়ে গেছে তা বলাই বাহুল্য। সাংগঠনিক রদবদল করে ক্ষতে কতটা প্রলেপ দেওয়া যাবে তা সময়ই বলবে।