অতিমারী, নির্বাচন সত্ত্বেও ১৫ মাসে ৪ লক্ষ পাত্রীকে রূপশ্রী রাজ্যের
‘রূপশ্রী’ (Rupashree) দূর করেছে মেয়ের বিয়ের দুশ্চিন্তা। পাত্রীর হাতে পৌঁছচ্ছে সরকারি অর্থ সাহায্য। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার এখন আর মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড়ের জন্য কপালে চিন্তার ভাঁজ চওড়া হয় না। করোনার সময়ও থেমে থাকেনি সাহায্য প্রদান। তাই পাত্রীপক্ষ বলছে, ‘রূপশ্রী’ দিচ্ছে নিশ্চয়তা।
মেয়েদের সামাজিক সুরক্ষা দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রূপশ্রী’ প্রকল্প জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছে। অর্জন করেছে সুনাম। প্রশংসা পেয়েছে বিশ্ব দরবারে। রাজ্যে দীর্ঘ আটদফার ভোটপর্ব এবং করোনাকালেও বন্ধ ছিল না ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের কাজ। নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৩ লক্ষ ১২ হাজার পাত্রীর কাছে পৌঁছেছে সরকারি সাহায্য। গতবছর আবেদন জমা পড়েছিল ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার। তাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা ও সরেজমিন পরিদর্শনের পর সামান্য কিছু আবেদনপত্র বাতিল হয়। তাছাড়া করনো মোকাবিলায় সরকার প্রথম থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কমেছে সংক্রমণের হার। বিয়ের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তাতে বিয়ের অনুষ্ঠান যেমন সীমিত সংখ্যক লোকসমাগমে হচ্ছে, তেমনই ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের সৌজন্যে পাত্রীর হাতে পৌঁছচ্ছে অর্থ সাহায্য। সেই সঙ্গে এবছর ছিল বিধানসভার ভোট। আটদফায় ২৯২টি আসনে ভোট নেওয়া হয়। যেসব মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল, তাঁরা ভেবেছিলেন ভোটের কারণে সমস্যায় পড়তে হবে। কিন্তু বিয়ের পিঁড়িতে পা রাখতে চলা পাত্রীদের প্রতি বিশেষ সহানুভূতির দৃষ্টি ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের।
নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের কাজ আটকায়নি। ভোটের সময়েও এই প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রাখার কথা আমরা কমিশনকে লিখেছিলাম। তাতে ছাড়পত্র মিলেছিল। দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবর্ষে ইতিমধ্যেই ৮০ হাজারের মেয়ের কাছে পৌঁছেছে সরকারি সাহায্য। অর্থাৎ মাত্র ১৫ মাসে মোট প্রায় ৪ লক্ষ পাত্রীকে রূপশ্রীর অর্থ সাহায্য দিল মমতার সরকার। গত মে মাসে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের আবেদন খতিয়ে দেখে ৩৫,৮২২টি নথিভুক্ত হয়। তার মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ১৫,৪১০টি। বাতিল হয়েছে মাত্র ৪২৭টি আবেদন।
বাকি আবেদনকারীর আর্থিক সাহায্য পৌঁছচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। পাশাপাশি জুনে নথিভুক্ত হয়েছে ৫০,৬৩৬টি আবেদন। মে মাসের কিছু আবেদনপত্র সংযুক্ত করে জুনে মঞ্জুর হয়েছে ৬৩,০১৯ জনের আবেদন। মন্ত্রী বলেছেন, সাধারণ মানুষ কতটা উপকৃত হচ্ছে, এই পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ। আবেদনপত্র পেলে আমরা তা খতিয়ে দেখি। আর্থিক সাহায্য সেই অনুযায়ী দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরিবারের বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকা বা তার কম হলে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক কন্যা পাবেন এককালীন ২৫ হাজার টাকা।