বিধানসভায় ৮ কমিটির মাথায় এবার তৃণমূলের বিধায়করাই
রাজ্যের পরিষদীয় গণতন্ত্রে নজিরবিহীন ঘটনা। বিধানসভার (West Bengal Assembly) কোনও স্ট্যান্ডিং কমিটি বা হাউস কমিটির চেয়ারম্যান পদে রইলেন না প্রধান বিরোধী দলের কোনও প্রতিনিধি। যে ৮টি হাউস এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে BJP বিধায়করা পদত্যাগ করেছিলেন সেই আটটি পদে নতুন চেয়ারম্যানদের নাম ঘোষণা করে দিলেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং নতুন চেয়ারম্যানরা প্রত্যেকেই শাসকদল তৃণমূলের সদস্য।
মুকুল রায়কে (Mukul Roy) বিধানসভার মহাগুরুত্বপূর্ণ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান করার প্রতিবাদে বিজেপির বিধায়করা সমস্ত কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালন করতে কমিটিগুলির সদস্যপদে থাকতে তাঁদের আপত্তি নেই। কিন্তু চেয়ারম্যান পদে থাকবেন না। শুক্রবার বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যানদের নিয়ে স্পিকার যে বৈঠক ডাকেন, তাতেও ছিলেন না বিজেপি বিধায়করা। বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (ISF) নওসাদ সিদ্দিকি।
বিজেপি বিধায়কদের আচরণে ক্ষুব্ধ স্পিকার ওই ৮টি কমিটির জন্য নতুন চেয়ারম্যানদের নাম ঘোষণা করেন। লেবার কমিটিতে বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গার জায়গায় মদন মিত্রকে (Madan Mitra) নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কমিটিতে বিজেপি বিধায়কদের জায়গায় তৃণমূল বিধায়কদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। মিহির গোস্বামীর জায়গা সুদীপ্ত রায়, আনন্দময় বর্মনের জায়গায় হুমায়ুন কবীর, অশোক কীর্তনিয়ার পরিবর্তে পান্নালাল হালদার, কৃষ্ণ কল্যাণীর পরিবর্তে আব্দুল খালেক মোল্লা, নিখিল রঞ্জন দের জায়গায় রুকবানুর রহমান, বিষ্ণুপ্রাসাদ শর্মার জায়গায় তপন দাশগুপ্ত এবং দীপক বর্মন জায়গায় অশোক চট্টোপাধ্যায়ের নাম বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যান পদে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আরও একবার পদত্যাগী বিজেপি বিধায়ক দের কাছে অধ্যক্ষ আবেদন করবেন যাতে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ পত্র ফিরিয়ে নেন। তাঁরা যদি পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেন, তাহলে নতুন যাদের চেয়ারম্যান করা হল, তাঁদের পদত্যাগ করতে বলা হবে।
এদিন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দোপাধ্যায় বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যানদের সাফ জানিয়ে দেন, “শুধু ভাতা নেওয়ার জন্য বিধানসভা নয়। স্ট্যান্ডিং কমিটি বৈঠকে গুরুত্ব দিয়ে উপস্থিত থেকে সভা পরিচালনা করতে হবে।” বিজেপি বিধায়কদের কটাক্ষ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সদস্য হিসেবে থাকবেন। অথচ চেয়ারম্যান থাকবেন না। এটা ঠিক নয়।”