স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

বাড়ছে ‘শিশুসাথী’ প্রকল্পের পরিধি, জীবনদায়ী হার্ট অপারেশন এবার আরও সহজলভ্য

July 18, 2021 | 2 min read

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শিশুসাথী’ প্রকল্পের পরিধি আরও বাড়ছে। ১২ বছরের নীচের বাচ্চাদের জটিল হার্টের অপারেশন এতদিন শিশুসাথী(Sishu Sathi) প্রকল্পের তালিকাভুক্ত হাসপাতালগুলিতে হলেও, তা হয় মূলত ১০ কেজি উপরের ওজনের বাচ্চাদের। বেসরকারিক্ষেত্রে দুধের শিশুদের (১০ কেজির নীচের) হার্ট অপারেশন হলেও, সরকারি ক্ষেত্রে তা হয় না বললেই চলে। প্রায় দু’দশক আগে যে অস্ত্রোপচারগুলি শুরু করে দেশ-দুনিয়ায় তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন বিশিষ্ট হার্ট সার্জেন ডাঃ দেবী শেঠি! এইবার পিজি, আর জি কর, এন আর এস, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে এইসব দুধের শিশুদের জীবনদায়ী অপারেশনের পরিকল্পনা নিল রা‌জ্য। এজন্য পিজি এবং এন আর এস মেডিক্যাল কলেজের যন্ত্রপাতি কেনা ও পরিকাঠামো উন্নতিতে ১৩ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে রাজ্য। পরিকাঠামো বাড়ছে বাকি দুই মেডিক্যালেরও। সম্প্রতি এই বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন কয়েকজন বিশিষ্ট হার্ট সার্জেন ও স্বাস্থ্যকর্তারা।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, জন্মগত হার্টের অসুখে ভুগছে বহু বাচ্চা। অবিলম্বে তাদের অপারেশন জরুরি। অপারেশন হচ্ছে, কিন্তু আরও অনেক বেশি হওয়া দরকার। এ কারণে জরুরিভিত্তিতে চার মেডিক্যালের পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ইত্যাদির জন্য আমরা এইমস-এর ডাক্তারবাবুদের আনার পরিকল্পনা নিয়েছি। মেডিক্যালের কার্ডিওথোরাসিক সার্জারির প্রধান ডাঃ প্লাবন মুখোপাধ্যায় বলেন, বৈঠক হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে ১০ কেজির নীচের ওজনের বাচ্চাদের অপারেশন পুরোদমে শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। 

সূত্রের খবর, ২০১৩ সালের আগস্টে ১২ অনূর্ধ্ব শিশু, কিশোর-কিশোরীদের হার্ট, স্নায়ু সহ ৩২ সমস্যায় বিনামূল্যে অপারেশনের জন্য শিশুসাথী প্রকল্প চালু করেন মমতা। কলকাতা, হাওড়া ও দুর্গাপুর মিলিয়ে ছ’টি প্রাইভেট হাসপাতাল ধাপে ধাপে প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ হয়। পিজি সহ বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজও তালিকাভুক্ত হয়। কিন্তু, সরকারিক্ষেত্রগুলিতে মূলত ১০ কেজির বেশি ওজনের বাচ্চাদের অপারেশনই হতে থাকে। তার নীচের ওজনের শিশুদের ওপেন হার্ট সার্জারির মতো অপারেশন প্রচণ্ড ঝুঁকিপূর্ণ। ধকল সহ্য করতে পারে না বহু বাচ্চাই। দক্ষ সার্জেন, এনএনসিইউ, নিকু-পিকু না থাকলে এইসব অস্ত্রোপচারের কথা স্বপ্নেও ভাবে না হাসপাতাল। 

আবার অপারেশন সময়মতো না হলে এট্রিয়াল সেপটাল ডিফেক্ট (হার্টে ফুটো), এট্রিওভেন্ট্রিকুলার সেপটাল ডিফেক্ট (হার্টে ফুটো), ইবস্ট্রেইন অ্যানোমালি (ভালভ ও অন্যান্য সমস্যা), ইন্টারাপটেড অ্যাওটিক আর্চ (মহাধমনি বন্ধ বা রক্ত চলাচল সীমিত), ব্লু বেবি (শরীরে অক্সিজেন কমে নীল হওয়া) ইত্যাদি জন্মগত রোগাক্রান্ত শিশুদের যে কোনও সময় প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা থাকে। এদিকে সদ্যোজাতদের ১-১.৫ শতাংশ শিশুই কোনও না কোনও জন্মগত হার্টের অসুখে ভোগে। ঠিক এ কারণে এবার পরিকাঠামো তৈরি করে বছরভরের অপেক্ষা আর অভিভাবকদের চরম দুশ্চিন্তায় ইতি চাইতে চাইছে রাজ্য। 
প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই পিজি, এন আর এস প্রভৃতি হাসপাতাল ১০ কেজির নীচের একটি-দুটি বাচ্চার সফল অস্ত্রোপচার করে তাক লাগিয়েছে। ফলে নিজেদের দক্ষ সার্জেনদের উপর ভরসা আছে রাজ্যের। আরও প্রশিক্ষণের জন্য দিল্লির এইমস থেকেও উড়িয়ে আনা হচ্ছে সার্জেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

আরো দেখুন