উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

ভাইরাস চিহ্নিত করার জন্য আধুনিক ল্যাবের প্রস্তুতি নিচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ

September 17, 2021 | 2 min read

শিশুদের জ্বর ও শ্বাসকষ্টের কারণ চিহ্নিত করতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ (North Bengal Medical College) হাসপাতালের ভাইরাস রিসার্চ অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরি বা ভিআরডিএলের শক্তিবৃদ্ধি করা হচ্ছে। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের সিদ্ধান্ত মতো উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এ ধরনের জ্বর, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

করোনা সংক্রমণ শুরুর কিছুদিন পর মেডিক্যালে ভিআরডি ল্যাব (VRD Lab) চালু হয়েছিল। সেই পরিকাঠামো গড়ে ওঠায় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস চিহ্নিতকরণের নানা ধরনের পরীক্ষার সুযোগ এখানে রয়েছে। কিন্তু, আরএস ভাইরাস সহ রেসপিরেটরি প্যানেল পরীক্ষা এখানে হয় না। এবারে শিশুদের এই রহস্যময় জ্বর ও শ্বাসকষ্টের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত আরএস ভাইরাস সংক্রমণকে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এবার সেই পরীক্ষা চালু করার জন্য মেডিক্যালের ভিআরডিএলের শক্তিবৃদ্ধি করা হচ্ছে। এখানে তৈরি রয়েছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থাও।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডা সঞ্জয় মল্লিক বলেন, মেডিক্যালে ভিআরডি ল্যাবে আরএস ভাইরাস চিহ্নিতকরণের পরীক্ষার বিষয়টি এখনও শুরু হয়নি। এই পরীক্ষার জন্য আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় রিএজেন্টস নেই। আমরা স্বাস্থ্যদপ্তরের কাছে তা চেয়েছি। সেই রিএজন্টস এলেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভিআরডি ল্যাবে আরএস ভাইরাস সহ রেসপিরেটরি প্যানেল পরীক্ষা করা হবে। কেননা আমাদের কাছে প্রয়োজনীয় পিসিআর মেশিন রয়েছে। আমরা সেই মতো ভিআরডি ল্যাবের শক্তিবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি।

জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের হাসপাতালে ভর্তির চাপ বাড়তেই বিভিন্ন জেলা থেকে নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হচ্ছে। আরএস ভাইরাস ছাড়া সম্ভাব্য বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা এখানে এখন হচ্ছে। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হদিশ না মেলায় ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া, স্ক্র্যাব টাইফাস, ম্যালেরিয়া, জাপানি এনসেফেলাটিস পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তাতে এখনও পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছ’জন শিশুর শরীরে স্ক্রাব টাইফাস ধরা পড়েছে। হাসপাতাল সুপার বলেন, গত একমাসের মধ্যে আমরা যে ছ’জন স্ক্র্যাব টাইফাস আক্রান্ত শিশুর সন্ধান পেয়েছিলাম তারমধ্যে পাঁচজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এখন একজন ভর্তি রয়েছে। এই ছ’জনের মধ্যে চারজন শিলিগুড়ির এবং দু’জন কার্শিয়াংয়ের। এর পাশাপাশি কয়েকজনের শরীরে ডেঙ্গু সংক্রমণও ধরা পড়েছে। তবে চিকনগুনিয়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু, যেহারে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে তাতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য সঠিক কারণ খুঁজে বের করাটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এদিকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশু ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার ছ’জন চিকিৎসাধীন শিশুর রক্তের নমুনা প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে সুপার ডাঃ প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য। তবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগে এদিন মোট ৬৭ জন শিশু ভর্তি থাকলেও তারমধ্যে মাত্র সাতজনের জ্বর, সর্দি, কাশি রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের আউটডোরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শহরে ডাক্তারদের প্রাইভেট চেম্বারগুলিতেও জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় বাড়ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য প্রত্যেক বছরই এই সময় শিশুদের এ ধরনের জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি হয়ে থাকে। বেশিরভাগ শিশুই সেই জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। কিছুদিন চিকিৎসার পর তারা সুস্থও হয়ে উঠছে। কিন্তু, অভিভাবকরা শিশুদের জ্বর, সর্দি, কাশি হলেই উদ্বিগ্ন হয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটছেন। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে ভয়ের কিছু নেই বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Virus, #North Bengal Medical College, #Lab

আরো দেখুন