রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

করোনা কালেও অর্থনীতির নিরিখে দেশের মধ্যে চতুর্থ বাংলা

September 18, 2021 | 2 min read

করোনা সংক্রমণের মধ্যেও শক্তিশালী হচ্ছে বাংলার (West Bengal) অর্থনীতি (Economy)। আর তা এতটাই যে, দেশের অর্থনীতির নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ চলে এসেছে চতুর্থ স্থানে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষের হিসেব কষে এই তথ্য জানাচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তার আগের অর্থবর্ষে দেশের মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে ছিল রাজ্য। শুধু তাই নয়, এক বছরে বাংলার অর্থনৈতিক কর্যকলাপ বা সার্বিক বাণিজ্য বেড়েছে প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি, সাধারণ মানুষের কাছে নগদের জোগান বাড়িয়েই বাজিমাত করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

অর্থনীতির সহজ ব্যাখ্যায়, রাজ্যের মোট উৎপাদন বা জিডিপি থেকে ট্যাক্স বাদ দিলে পাওয়া যায় ‘গ্রস ভ্যালু অ্যাডেড’। তার থেকে আরও কিছু উপাদান বাদ দিয়ে ‘নেট ভ্যালু অ্যাডেড’ বা এনভিএ’র হিসেব কষা হয়। স্বাভাবিক কারণেই জিডিপি থেকে এনভিএ’র অঙ্ক কম হয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে এনভিএ’র নিরিখে দেশের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রাজ্য। চলতি বাজারদর অনুযায়ী, বাংলার মোট এনভিএ’র পরিমাণ ১১ লক্ষ ৪ হাজার ৮৬৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তা ছিল ১০ লক্ষ ১৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গের আগে রয়েছে তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটক। ২০১১ সালে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেই সময়ের তুলনায় আড়াই গুণ বেড়েছে রাজ্যের এনভিএ। এই তথ্য দিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কই।

‘অ্যাডভান্স এস্টিমেট’ অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট উৎপাদন বা জিডিপি’র পরিমাণ প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকা। তার আগের বছরের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা বেশি। অর্থাৎ, জিডিপি’র নিরিখে রাজ্য যে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে, সেই তত্ত্বকেই সিলমোহর দিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই বিশ্লেষণ করেছেন অমিত মিত্র। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা, ব্রিটেন বা জাপান আজ যে অর্থনীতির মডেলে চলছে, এরাজ্যে আমরাও সেই নীতি নিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন কৌশল নিয়েছেন, যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মরে। একদিকে, বিভিন্ন প্রকল্পে মানুষের হাতে বেশি বেশি নগদ টাকা আসছে। অন্যদিকে, সেই টাকা মানুষ খরচ করার ফলে বাজারে পণ্যের চাহিদা তৈরি হচ্ছে। এতেই সচল হচ্ছে রাজ্যের অর্থনীতির চাকা। অথচ, কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক এর উল্টো পথ নিয়েছে। তারা ব্যাঙ্কগুলিকে উৎসাহ দিচ্ছে ঋণ দেওয়ার জন্য। বিনিয়োগকারী বা কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে কর ছাড়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। মোদি সরকারের আশা, এতে বিনিয়োগ বাড়বে। তাতে কাজের বাজার তৈরি হবে। কিন্তু সহজ সত্যিটা হল, পণ্যের চাহিদা না তৈরি হলে সংস্থাগুলি লগ্নি বা উৎপাদন, কোনওটাই করবে না। মানুষের হাতে টাকা না থাকলে, চাহিদা তৈরি হবে কীভাবে?’ অমিতবাবুর সাফ কথা, ‘কেন্দ্রের এই ভুল তত্ত্ব যে সুপার ফ্লপ, তার প্রমাণ দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার। গত আর্থিক বছরে দেশে বৃদ্ধির হার ছিল মাইনাস ৭.৩ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গে বৃদ্ধির হার ১.০২ শতাংশ। অর্থাৎ কেন্দ্রের থেকে প্রায় আট শতাংশ এগিয়ে। বাজেটে ৯০ হাজার কোটি টাকা পরিকল্পনা খাতে খরচের যে সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিয়েছেন, তার ৮৫ শতাংশই মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। পরিকাঠামো তৈরির পাশাপাশি এই পদক্ষেপ ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। আর তাতে সিলমোহর দিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।’ 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Economy

আরো দেখুন