বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মমতাকে সমর্থনকে করবে বাইচুংয়ের দল
আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ইউনাইটেড ফোরামকে সমর্থন জানাবে বাইচুং ভুটিয়ার দল হামরো সিকিম। বিজেপিকে হারাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ করে যে জোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে তা সঠিক বলেই মনে করেন ভারতীয় ফুটবলের আইকন বাইচুং। নিজের দলকে এই জোটের শরিক করার জন্য বাইচুং সিকিমে তৃণমূল স্তর থেকে কাজও শুরু করে দিয়েছেন। শনিবার শিলিগুড়িতে পর্যটন দিবসের একটি অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের একথা জানান বাইচুং।
রাজনীতিতে নতুন নন বাইচুং। বাংলা থেকেই তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তৃণমূলের হয়ে রাজনীতিতে তাঁর আত্মপ্রকাশ। রাজনীতির ময়দানে পা রেখেই তিনি ২০১৪ সালে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে এই সেলিব্রেটি ফুটবলার সেবার বিজেপি প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার কাছে হেরে যান। এরপর ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন। বিধানসভা নির্বাচনেও তিনি জিততে পারেননি। বাম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্যের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন বাইচুং ভুটিয়া। এরপর তাঁকে উত্তরবঙ্গ স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাইচুং ধীরে ধীরে নিজেকে বাংলার রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিতে থাকেন। প্রায় দু’বছর নীরব ছিলেন। তারপর নিজের রাজ্যে নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করেন বাইচুং।
বাংলার অনেক প্রাক্তন ফুটবলার, ক্রিকেটার তৃণমূল তথা রাজনীতিতে এসেই সফল হয়েছেন, সেখানে সেলিব্রেটি হয়েও বাংলার রাজনীতিতে বাইচুং কেন সফল হতে পারলেন না। তাঁর এত ভক্ত, অনুগামী থাকা সত্ত্বেও কেন পরপর দু’টি নির্বাচনে তাঁকে হারতে হল? এনিয়ে রাজনৈতিক মহলে অনেক চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ফুটবলার হিসেবে চূড়ান্ত সফল হলেও রাজনীতির যুদ্ধে সিকিমের ছেলে তকমাই বাইচুংয়ের বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল। বাইচুংও সেটা বুঝেছিলেন। তাই ২০১৯ সালে নিজের রাজ্য সিকিমে ফিরে হামরো সিকিম পার্টি নামে নতুন রাজনৈতিক দল গড়েন।
এদিন বাইচুংও সেকথা স্বীকার করেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মানুষ যেকোনও রাজনৈতিক দলেই যোগ্য ব্যক্তিকে চায়। নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে নিজের এলাকার লোককেই প্রথম পছন্দ করেন ভোটাররা। আমার ক্ষেত্রে সেটা ছিল না। ফুটবলার হিসেবে আমার অনেক ফ্যান রয়েছে। কিন্তু এখানে ভোটযুদ্ধে আমার বিরুদ্ধে বিরোধীদের সিকিমের ছেলে প্রচার মানুষকে প্রভাবিত করেছিল। সেই অভিজ্ঞতাকে হাতিয়ার করেই আমি সিকিমে নতুন দল করেছি। যোগ্য নেতা-কর্মীদের নিয়ে এখন জনসংযোগ বৃদ্ধিতে জোর দিয়েছি। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এভাবেই শক্তি বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপি বিরোধী জোটকে শক্তিশালী করতে হবে। তাহলেই বিজেপিকে হারানো যাবে।