ভ্রমণ বিভাগে ফিরে যান

করোনাকালে বাড়িতে বসে হাঁপিয়ে উঠেছেন মানুষ, পুজোয় ঘুরতে যাওয়ার ঝোঁক বাড়ছে

September 30, 2021 | 2 min read

টানা বেশ কয়েক মাস ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করার পর আচমকাই পুজোর ক’টা দিন ছুটি পেয়েছেন অর্কদীপ দে। তারপর থেকেই পেয়ে বসেছে বেড়াতে যাওয়ার উদগ্র বাসনা। কিন্তু, যাব বললেই কী আর যাওয়া যায়। হোটেল থেকে ট্রেনের টিকিট মেলা ভার। তাতেও কুছ পরোয়া নেহি। অর্কদীপের কথায়, ‘বাড়িতে বসে বসে হাঁপিয়ে উঠেছি। কোথাও একটা বেড়াতে না গেলে পাগল হয়ে যাব। দরকার হলে রাস্তায় থাকব। কিন্তু যাবই।’

শিয়রে করোনার তৃতীয় ঢেউ। কিন্তু চিকিৎসকদের এই সাবধানবাণী শুনছে কে? অর্কদীপের এই মরিয়া মনোভাবই এখন ছড়িয়ে পড়েছে বাঙালির ঘরে ঘরে—বলছিলেন ট্রাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের প্রেসিডেন্ট কৌশিক কর। তাঁর কথায়, ‘একেই বলা হচ্ছে রিভেঞ্জ ট্যুরিজম বা প্রতিশোধের পর্যটন। বেড়াতে যাওয়ার মাধ্যমে মানুষ করোনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চাইছেন।’ 

সংক্রমণের প্রকোপ কমার পাশাপাশি দেশজুড়ে টিকাকরণে গতি আসতেই পুজোয় বেড়ানোর যাবতীয় প্ল্যান সেরে ফেলেছে বাঙালি। হাজারও নিয়মের বেড়াজালের মধ্যেই উত্তরবঙ্গ থেকে গোয়া বা সিকিম থেকে মন্দারমণিতে বুকিং হচ্ছে হুড়মুড়িয়ে। কৌশিকবাবু জানান, ‘বেড়াতে যাওয়ার জন্য খোঁজখবর নেওয়ার ফোনের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। শুধু খোঁজখবরেই বিষয়টা আটকে থাকছে না। তবে, হোটেল বুকিং করতে এখনও কেউ কেউ ইতস্তত করছেন। পুজোর ঠিক আগে-আগে কী পরিস্থিতি থাকে, সেটা দেখেই এগতে চাইছেন অনেকে।’

এবার পুজোয় কাছাকাছি কোনও নির্জন জায়গাই বেশি পছন্দ বঙ্গ পর্যটকদের। বিশেষ করে যেখানে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। আবার কাশ্মীর বা লেহ-লাদাখের মতো চিরাচরিত জায়গাগুলিতেও মানুষের আগ্রহ রয়েছে। তবে সেটা তুলনায় কম। ট্রাভেল এজেন্টদের দাবি, উত্তরবঙ্গে বেড়াতে যাওয়ার চাহিদাই এবার বেশি। কিন্তু, তিনদিন-দু’রাতের প্যাকেজের চাহিদা সবথেকে বেশি। সুন্দরবন, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে যাওয়ার আগ্রহও রয়েছে চোখে পড়ার মতো। কৌশিকবাবু জানান, অন্তত ৭০ শতাংশ পর্যটকই রাজ্যের মধ্যে বেড়াতে যেতে চাইছেন। এর নেপথ্যে কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমত ভিনরাজ্যে যেতে মানুষ সাহস পাচ্ছেন না। দ্বিতীয়ত, কোভিড বিধির বেড়াজাল এড়াতে চাইছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গে যেখানে কম টাকার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট দেখিয়েই পাহাড়ে যাওয়া যাচ্ছে, সেখানে ভিনরাজ্যে বেশি টাকার আরটিপিসিআর পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। তাই খরচ বাঁচানোর উদ্দেশ্য নিয়েই অনেকে রাজ্যের বাইরে পা রাখতে চাইছেন না।’

একই মত ব্যক্ত করেছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডার্স অব বেঙ্গলের ভাইস প্রেসিডেন্ট সমর ঘোষও। তাঁর বক্তব্য, এবার পুজোয় বাঙালির কাছেপিঠে ঘুরতে যাওয়ার ট্রেন্ডই বেশি। তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে বেড়াতে যাওয়ার মরিয়া মনোভাব থাকলেও রাজ্যের বাইরে এখনই হোটেল বুকিং সে হারে হচ্ছে না। তবে পুজোর মুখে এই খরা কেটে যাবে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Tourism

আরো দেখুন