কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

আইনি নোটিসের জবাব আইনি পথেই, জুতোর প্যান্ডেল বিতর্কে ব্যাখ্যা ভারতচক্র পুজো কমিটির

October 9, 2021 | 2 min read

আইনি নোটিসের জবাব আইনি পথেই দেওয়া হবে। জুতোর প্যান্ডেল বিতর্কে পরিষ্কার জানিয়ে দিল দমদম পার্কের ভারতচক্র পুজো কমিটি।

জুতো দিয়ে পুজো প্যান্ডেল সাজিয়ে ‘ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত’ হানা হয়েছে, এই অভিযোগে তুলে শনিবার ভারতচক্র পুজো কমিটিকে আইনি নোটিস ধরিয়েছেন পৃথ্বীবিজয় দাস এক আইনজীবী। প্যান্ডেল কেন জুতো দিয়ে সাজানো হবে, এই প্রশ্ন তুলে বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপি-ও।

সেই বিতর্কের প্রেক্ষিতেই ভারতচক্র পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শৈবাল বসু বললেন, ‘‘প্যান্ডেল-সজ্জায় জুতোর ব্যবহার নিয়ে নেটমাধ্যমেও যে বিতর্ক হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমরা অবগত। কিন্তু এই গোটা বিষয়টির সঙ্গে মাতৃবন্দনার কোনও যোগ নেই। মন্দিরের ভিতরের থিম সম্পূর্ণ আলাদা।’’

সাম্প্রতিক কালের কৃষক আন্দোলনকে উৎসর্গ করতেই মণ্ডপের বাইরে প্রবেশপথে একটি কাঠামো তৈরি করেছে ভারতচক্র। বিরাট পদচিহ্নের মাঝে অসংখ্য মুখ এঁকে গড়া হয়েছে সেই কাঠামো। যার আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে জীর্ণ, ছেঁড়া চটি।

পুজো কমিটির সম্পাদক প্রতীক চৌধুরী আনন্দবাজার অনলাইন-কে বললেন, ‘‘আমাদের এ বারের পুজোর থিম, ‘ধান দেব না, মান দেব না’। সেই সঙ্গেই কৃষক আন্দোলনকেও তুলে ধরতে চেয়েছি আমরা। আন্দোলনের সময়ে দেখা যায়, হাজার হাজার কৃষক পথে নামছেন। বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। পুলিশ ব্যারিকেড করে তাঁদের আটকায়। পায়ের জুতো রাজপথে ফেলে রেখেই তাঁরা সরে যান। আবার ফিরে আসেন। এই বিষয়টিকেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমরা। শুধু সাম্প্রতিক কালের কৃষক আন্দোলনই নয়, সন্ন্যাসী ও তেভাগা আন্দোলনের কথাও তুলে ধরা হয়েছে আমাদের প্যান্ডেল-সজ্জায়।’’

তাঁর বক্তব্য, ‘‘মন্দিরে ঢোকার সময়ে আমরা জুতো বাইরে খুলে রেখেই ঢুকি। আমাদের মণ্ডপে ঢুকলেই দেখা যাবে, দেবী ধানক্ষেতের উপর বসে আছেন। সম্পূর্ণ ভুল ব্যাখ্যা করে এই বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। হতে পারে কিছু উগ্র ধর্মীয় সংগঠন এই কাজটি করছে।’’

ভারতচক্রকে আইনি নোটিস ধরিয়ে আইনজীবী পৃথ্বীবিজয় লিখেছেন, ‘আমি নিজে এক জন সনাতন হিন্দু। জুতো-হাওয়াই চটি দিয়ে প্যান্ডেল সাজানোর বিষয়টি আমি মেনে নিতে পারছি না। এই ধরনের চিন্তাভাবনা আমার ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হেনেছে। সাধারণ মানুষের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত হানতে গোটাটাই ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছে।’

সেই প্রসঙ্গেই শৈবালবাবু বলেন, ‘‘আমরাও সনাতন হিন্দু। গত ২১ বছর ধরে আমরা নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো করছি। কারও ভাবাবেগে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা যা করেছি অনেক ভেবে চিন্তেই করেছি। কী করা উচিত আর কী উচিত নয়, আমাদের সে ব্যাপারে জ্ঞান আছে।’’

দেশ জুড়ে চলতে থাকা কৃষক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন থেকেই প্যান্ডেল-সজ্জায় এই পরিকল্পনা করেছে ভারতচক্র ক্লাব, বললেন শৈবালবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা এই কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করি। কৃষকদের দুর্দশাগ্রস্ত জীবনের ছবি ফুটিয়ে তুলতেই আমাদের শিল্পী ওই কাঠামো তৈরি করেছেন। এখানে জুতো স্রেফ একটি কাঁচামাল। এই বিষয়টিকে তুলে ধরেই আমরা আইনি জবাব দেব। সাধারণ মানুষকে বলব, ছবি দেখে নয়। আপনারা মণ্ডপে এসে স্বচক্ষে গোটা বিষয়টি দেখে যান।’’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga puja, #durga puja committees

আরো দেখুন