রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের কার্যকরী চেয়ারম্যান হতে পারেন নাপরাজিত?

আজ সোমবার অবসর নিচ্ছেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনার চেয়ারম্যান বিচারপতি গিরিশচন্দ্র গুপ্ত। পরবর্তী কমিশন প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। তবে নবান্ন সূত্রের দাবি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের শীর্ষ পদে এখনই স্থায়ী চেয়ারম্যান বসছে না। বিকল্প হিসেবে কমিশনের অন্যতম সদস্য প্রাক্তন পুলিস কর্তা নাপরাজিত মুখোপাধ্যায়কে কার্যকরী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক আমলা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের ঠান্ডা লড়াই চলছে। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের পরবর্তী চেয়ারম্যান ইস্যুতেও ইতিমধ্যে মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। শুধু তাই নয়, আইন অনুযায়ী রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের স্থায়ী চেয়ারম্যানের পদে অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতিকে বসানোর জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি নিয়োগ কমিটি রয়েছে। যার প্রধান খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাকি দুই সদস্য হলেন, বিধানসভার স্পিকার এবং বিরোধী দলনেতা। এই কমিটি পরবর্তী চেয়ারম্যানের নাম সুপারিশ করে রাজভবনে প্রস্তাব পাঠায়। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের নিয়োগ কর্তা স্বয়ং রাজ্যপাল। সেই আনুষ্ঠানিকতা করার মতো পরিস্থিতি এখন নেই বলে সরকার স্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের পথে আপাতত এগবে না বলে দাবি ওই আমলার। এ প্রসঙ্গে রবিবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের নিয়োগ কমিটির কোনও বৈঠকের খবর আমার জানা নেই। স্বভাবতই আজ বৈঠক করে নাম চূড়ান্ত করে নয়া চেয়ারম্যানের নাম প্রস্তাব আকারে পাঠানোর সুযোগ কম। সেই নামে রাজভবনের সিলমোহর পেয়ে
আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনের স্থায়ী প্রধানের নাম ঘোষণা কার্যত অসম্ভব। তাই সংশ্লিষ্ট আইনের ২৫ নম্বর ধারাকে হাতিয়ার করে কমিশনের অন্যতম সদস্যকে অস্থায়ীভাবে কার্যকরী চেয়ারম্যান করে দেওয়ার সংস্থান রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও বৈঠক কিংবা রাজভবনের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজ্যের মুখ্যসচিব সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেই কার্যকরী চেয়ারম্যান নিয়োগ করতে পারেন। সেই সূত্রেই আজ নাপরাজিত মুখোপাধ্যায়কে ওই পদে কাজ চালিয়ে যাওয়ার আদেশনামা জারি হতে চলেছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। এ প্রসঙ্গে রবিবার নাপরাজিতবাবু বলেন, এর আগে দু’বার কার্যকরী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলেছি। রাজ্য সরকার আমায় উপযুক্ত মনে করলে দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।
এদিকে, ২০১৬ সাল থেকে পাঁচ বছর কমিশনের প্রধান হিসেবে একাধিক সময়ে গিরিশচন্দ্র গুপ্ত বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন। রাজ্য পুলিসের প্রাক্তন ডিজি নাপরাজিতবাবুর সঙ্গে বহু বিষয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। এদিন মেয়াদ ফুরানো প্রসঙ্গে গিরিশবাবুর প্রতিক্রিয়া, যা বলার অবসরের দিন বলব।