ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঠ্য পুস্তকে নেতাজিকে আনার ভাবনা রাজ্যের
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী (Netaji Subhas Chandra Bose Birth Anniversary) এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে নেতাজির ট্যাবলো – এই নিয়েই এখন জোর চর্চা চলছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এক সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে নেতাজিকে নিয়ে বড় ঘোষণা করে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নেতাজিকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঠ্য পুস্তকে আনার জন্য সিলেবাস কমিটিকে পর্যালোচনা করার নির্দেশ ব্রাত্য বসুর। ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, “১৯৪৩ সালে নেতাজি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে শপথ নেন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। মাথায় রাখতে হবে, সেই সময় অখণ্ড ভারতবর্ষ ছিল। পরাধীন অখণ্ড ভারতবর্ষ। উপনিবেশ কালে এটি তিনি করেছিলেন এবং নিজের ক্যাবিনেট গঠন করেছিলেন। এটি সিলেবাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক বা সময়কালীন অভিঘাত আছে কি না, সেটি আমরা সিলেবাস কমিটিকে বলব। এখানে সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যানও রয়েছেন। তাঁকে আমরা বলব বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য।”
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটি বড় অংশের মতে, রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে এখন এক নতুন দড়ি টানাটানির খেলা চলছে। নেতাজি কার? তাই নিয়েই চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। আর এরই মধ্যে নেতাজিকে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়ার যে চিন্তাভাবনা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর গলায় শোনা গেল, তাতে বাংলা নেতাজির সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও কিছুটা ত্বরান্বিত করল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এর আগে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে নেতাজির অবদানকে বিভিন্নভাবে স্বীকৃতি দিতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে। পরাধীন ভারতের বাইরে যে আজাদ হিন্দ সরকার নেতাজি গঠন করেছিলেন, সেই আজাদ হিন্দ সরকারের দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে অনস্বীকার্য অবদান ছিল, তা বিভিন্ন সময়ে বুঝিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীকে পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগেই। এই বছর দিল্লিতে ইন্ডিয়া গেটে অমর জওয়ান জ্যোতিকে ন্যাশনাল ওয়ার মিউজিয়ামে মিলিয়ে দিয়ে সেখানে নেতাজির মূর্তি স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যতদিন না মূর্তি স্থাপন হচ্ছে ততদিন হলোগ্রাম মূর্তি থাকবে নেতাজির। কিন্তু দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে আধিকারিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
যদিও কিছুদিন আগে গয়েশপুরে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, নেতাজি যদি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হতেন, তবে আজ ভারতের এই দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা ও বেকারত্ব থাকত না। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে এখনও এই ধরনের কোনও ঘোষিত অবস্থানের কথা বলা হয়নি। আর এরই মধ্যে নেতাজিকে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাঠ্য পুস্তকে স্থান দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলে, গোটা দেশকে বিষয়টি নতুনভাবে চিন্তা করার পথ দেখাচ্ছে বাংলা। অন্তত এমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।