রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বাঘের হামলায় নিহত মৎস্যজীবীর চক্ষুদান করল তাঁর পরিবার

February 2, 2022 | 2 min read

সম্ভবত ভারতবর্ষে প্রথম। সুন্দরবনে (Sundarban) তো নয়ই। বাঘের (Royal Bengal Tiger) আক্রমণে নিহতের চক্ষুদান করলেন তাঁর পরিবার। যা ইতিহাস তৈরি করল এ রাজ্যের মৎস্যজীবীদের মধ্যে। আর তা করে দেখালেন বাঘের আক্রমণে নিহত শংকর সর্দারের পরিবার। নিহত ওই মৎস্যজীবীর বাড়ি সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের দেউলবাড়ির কাঁটামারি এলাকায়।


সোমবার সুন্দরবনের চিতুরি জঙ্গলে কাঁকড়া সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম হন ওই মৎস্যজীবী। প্রথমে কুলতলি হাসপাতাল, তারপর সেখান থেকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রমা কেয়ারে রেখে চলে চিকিৎসা। কিন্তু ডাক্তারদের শত চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি শঙ্করকে। অবশেষে মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ওই মৎস্যজীবী। এরপর পরিবারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাঁরা শঙ্করের চোখ দুটি দান করবেন।


সুন্দরবনে বহু মৎস্যজীবীই বাঘের আক্রমণে কলকাতার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গিয়েছেন। কিন্তু কেউই চক্ষুদানের কথা ভাবেননি। শঙ্করের পরিবারকে সেই কথা ভাবিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

আর তাদের আবেদনে সাড়া দিয়েই পিজি হাসপাতালে মৃত শঙ্করের চোখ দুটি দান করতে সম্মতি দেন তাঁর পরিবারের লোকজন। মৃত মৎস্যজীবী শঙ্করের চোখ দুটি নিয়ে যায় শঙ্কর নেত্রালয়। শঙ্করের শ্বশুরমশাই রামপ্রসাদ বাগানির হাতে চক্ষুদানের শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়।


স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, বাঘের আক্রমণে মৃতের চক্ষুদান এই প্রথম। সম্ভবত ভারতবর্ষের কোথাও এরকম ঘটনার নজির নেই। পরিবারকে অনেক বোঝানোর পর তাঁরা চক্ষুদানে সম্মত হন। সুন্দরবনের ইতিহাসে এটা একটা নজির তৈরি করল। শঙ্করের দুটি চোখ থেকে দুজন কর্নিয়া পাবেন। এটা একটা বিরল ঘটনা হবে।


এ বিষয়ে নিহত মৎস্যজীবীর শ্বশুরমশাই রামপ্রসাদ বাগানি বলেন, আমার জামাইকে তো আর কখনও ফিরে পাব না। কিন্তু তার এই চক্ষুদানের মাধ্যমে যদি কোনও মানুষের উপকার হয়, সেই কাজই আমরা করলাম। সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা বঞ্চিত থাকলেও তাদেরও সমাজের প্রতি কিছু দায়িত্ব এবং কর্তব্য আছে, সেটা প্রমাণ করলাম। চক্ষুদানের পর দেহটি ময়নাতদন্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #sundarban, #fisherman, #Eye donation, #tiger attack

আরো দেখুন