আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল শাসক জোট, কী হবে শ্রীলঙ্কার ভবিষ্যৎ?

April 5, 2022 | 2 min read

টালমাটাল শ্রীলঙ্কা।

চলছে প্রতিবাদ। দেশের যুবসমাজের দাবি একটাই, ক্ষমতা ছাড়ুন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষে। এর মধ্যেই পার্লামেস্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল শাসক জোট। সুতরাং প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল রাজাপক্ষে পরিবারের ভবিষ্যৎ।

এদিন পার্লামেন্টে শাসক জোটের ৪১ জন সাংসদ ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে যান। ফলে গোটাবায়া রাজাপক্ষের নেতৃত্বাধীন শাসকজোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এবার কি তাহলে পাকিস্তানের মতো শ্রীলঙ্কাতেও সরকার পড়ে যাবে?‌ পরবর্তী সরকার তাহলে কে?‌ শ্রীলঙ্কার এই টালমাটাল আর্থিক অবস্থা সামালই দেবে কে?‌

রবিবার শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা থেকে ২৬ জন মন্ত্রী ইস্তফা দেন। ইস্তফা দেন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর অজিত কাব্রাল। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে শুধু ক্ষমতায় রয়ে গিয়েছেন। দেশের অর্থমন্ত্রী পদে বসানো হয় আলি সাবরিকে। দেশবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে এক রাত ঘুরতেই ইস্তফা দিলেন সেই সাবরিও।

প্রেসিডেন্ট ‘‌ঐক্যবদ্ধ সরকার’‌ গড়ে তোলার জন্য বিরোধীদেরও পাশে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিরোধীরা এই দাবি মানেননি। উল্টে তাঁরা রাজাপক্ষে সরকারের ইস্তফা চেয়েছেন। তাতেও বিক্ষোভ থামেনি। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনি এবং রবি সোশাল মিডিয়া ব্লক করা হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। রবিবার সন্ধের পর থেকে সোশাল মিডিয়া ফের কার্যকর হয় শ্রীলঙ্কায়।

গত কয়েক দিন ধরে নরকযন্ত্রণায় শ্রীলঙ্কাবাসী। এক কেজি চালের দাম ৫০০ টাকার বেশি। দেশে আর ছিঁটেফোটা ডিজেল নেই। ফলে রাস্তায় সরকারি, বেসরকারি আন বন্ধ। ১৩ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ নেই। হাসপাতালে জরুরি অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওষুধ নেই। বিদ্যুৎ বাঁচানোর জন্য রাস্তার আলো বন্ধ। মোবাইল পরিষেবা ব্যহত। বন্ধ থাকতে অফিসের কাজ।

দেশের রাষ্ট্রপতি এখন গোটাবায়া রাজাপক্ষে। তাঁর ভাই মাহিন্দা রাজাপক্ষে প্রধানমন্ত্রী। শ্রীলঙ্কার অর্থমন্ত্রী তাঁদের ছোট ভাই বেসিল রাজাপক্ষে। কৃষিমন্ত্রী পরিবারের সবথেকে বড় ভাই চামাল রাজাপক্ষে। ক্রীড়ামন্ত্রী ভাগ্নে নামাল রাজাপক্ষে। এই পরিবারের বিরুদ্ধে একপ্রকার ফুঁসছে গোটা দেশ। দুর্নীতির অভিযোগ তুলছে।

প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার সরকারের ওপর এখন ৫,১০০ কোটি ডলারের ঋণ। তা শোধ করার জন্য ২০২০ সালের মার্চ থেকে আমদানি বন্ধ করেছে শ্রীলঙ্কা। ফলে বিপাকে দেশবাসী। জরুরি জিনিস, এমনকী ওষুধ, জ্বালানিও আর নেই। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড–এর কাছে ঋণ মকুবের আর্জি জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার সরকার। ভারত এবং চীনের কাছেও ঋণ চেয়েছে। ভারত ইতিমধ্যে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের ঘোষণা করেছে। তাতে কতটা সুরাহা হবে, সন্দেহ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Parliament, #Rajapaksa Unrest, #Sri Lanka Crisis

আরো দেখুন