খেলো ইন্ডিয়া: দেশের সেরা বাংলার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুকুটে যুক্ত হল নতুন পালক। ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় প্রথমবার অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েই চ্যাম্পিয়ন হল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা ফুটবল দল। সোমবার গুরু নানক দেব ইউনিভার্সিটিকে ২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের এই কৃতিত্বে গর্বিত গোটা জঙ্গলমহল।
বিশ্ববিদ্যালয়কে এই সম্মান এনে দেওয়ার কৃতিত্ব দলের অধিনায়ক মুগলি হেমব্রম, সিঙ্গো মুর্মু, মমতা হাঁসদা, রাধি মুর্মু, নমিতা মুর্মুদের। দু’-একজন ছাড়া দলের প্রত্যেকেই প্রান্তিক আদিবাসী পরিবারের মেয়ে। পায়ে ফুটবলের দক্ষতা থাকলেও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া তো দূরের কথা, সময়মতো খাবার জুটত না পেটে। কিন্তু, তা সত্ত্বেও নিজেদের হার না মানা মানসিকতা, আর অদম্য জেদের উপর ভর করেই বিশ্ববিদ্যালয়কে জয় এনে দিয়েছেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস অফিসার সুহাস বারিক বলেন, মোট ২০জন ছাত্রী ওই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিল। প্রত্যেকেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন কলেজের পড়ুয়া। সংসারের কাজ, পড়াশোনা ছাড়াও নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আজ ওরা এই জায়গায় পৌঁছেছে। জঙ্গলমহলের নাম উজ্জ্বল করেছে।
প্রসঙ্গত, এই প্রতিযোগিতায় যাওয়ার আগে প্রথমে রাজ্যস্তরে উত্তীর্ণ হতে হয়েছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় মহিলা ফুটবল দলকে। রাজ্যস্তরে প্রথম হওয়ার পরেই গোটা পূর্ব ভারতের মধ্যেও প্রথম হয় তারা। এরপর সোমবার গোটা দেশের মধ্যে এই সাফল্য পেল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়।
সূত্রের খবর, বেঙ্গালুরুতে জৈন ইউনিভার্সিটিতে গত ২৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় ‘খেলো ইন্ডিয়া’র বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের মেয়েদের ফুটবল প্রতিযোগিতা। গোটা দেশের মাত্র আটটি বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়। যার মধ্যে ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। একের পর ম্যাচে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে ফাইনালে পাঞ্জাবের গুরু নানক দেব ইউনিভার্সিটির মুখোমুখি হয় জঙ্গলমহলের মেয়েরা। সেই ম্যাচে ৪৮মিনিটের মাথায় গোল করে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে দেন সিঙ্গো মুর্মু। এরপর ৭৩ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়ান অধিনায়ক মুগলি হেমব্রম। অবশেষে ২-০ গোলে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে চ্যাম্পিয়ন হয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে যা এই প্রথম।