দেশ বিভাগে ফিরে যান

ঢালাও রেশন কার্ড বাতিল! আমজনতাকে সংকটের মুখে ফেলল যোগী সরকার

May 22, 2022 | 2 min read

অতিমারি কাটিয়ে সবে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ, এরই মধ্যে উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষকে নতুন করে সংকটের মুখে ঠেলে দিল যোগী সরকার। ঢালাও রেশন কার্ড বাতিলের ঘোষণা করল যোগী সরকার। ভোটের মুখে দফায় দফায় দেশজুড়ে বিনামূল্যে রেশনের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন জিততে সে রাজ্যের জন‌্য আলাদা করে ঢালাও রেশনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বিজেপির তরফে। কিন্তু সেগুড়ে কাঁকর! বিনা মূল্যে রেশন তো দূরস্থ! রাখা হয়নি কোন প্রতিশ্রুতি, ভোট মিটতেই নিজ মূর্তি ধরেছে বিজেপি সরকার। রেশন কার্ড বাতিল নিয়ে উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম হয়েছে।

শনিবার সামাজিক মাধ্যমে, একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও দেখা গিয়েছে, লখনউয়ের কাছে বারাবাঁকিতে এক যুবককে ঢালাও রেশন কার্ড বাতিলের ঘোষণা করতে শোনা যাচ্ছে। অযোগ্য কেউ রেশনে চাল-গম তুলছেন জানা গেলে কড়া আইনি ব্যবস্থা হবে। ওই গ্রাহক যেদিন থেকে রেশন নিচ্ছেন, সেদিন থেকেই স্থানীয় বাজারমূল্যের হারে চাল ও গমের দাম আদায় করা হবে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভাইরাল ওই ভিডিওটিতে যুবককে বলতে শোনা গিয়েছে, ১৫ মের মধ্যে গ্রাহকদের রেশন কার্ড বারাবাঁকিতে গিয়ে নির্দিষ্ট সরকারি দপ্তরে জমা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় বিনামূল্যের রেশন বন্ধ করে দেওয়ার পথে হাঁটতে পারে মোদী সরকার। গমের পরিমাণও কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই সংকটের পরিস্থিতিতে আরও এক বিপর্যয়ের মুখে সাধারণ মানুষকে দাঁড় করিয়ে দিল যোগীর ডবল ইঞ্জিন সরকার। ​ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি।

ওই যুবকের কথা অনুযায়ী, কে বা কারা এই ‘অযোগ্য’ বা কার্ড বাতিলের ঘোষণার অর্থ কী তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন! জানা যাচ্ছে, রেশন কার্ডের ক্রাইটেরিয়া হিসেবে গাড়ি বা ট্রাক্টর রয়েছে, শহরে ফ্ল্যাট রয়েছে, অনাবাসী ভারতীয়, সরকারি চাকরিতে কর্মরত এই জাতীয় জিনিসগুলোকে রাখা হচ্ছে। যদিও সূত্রের খবর, এই সব ক্রাইটেরিয়া যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সরকারি কোনও প্রক্রিয়া এখনও চালু হয়নি। যোগীরাজ্যে রেশনে দেওয়া চাল ও গমের দাম ৩২ টাকা ও ২৪ টাকা। যোগীরাজ্যের সরকারি ফরমান অনুযায়ী, সেই মূল্য অনুযায়ী রেশন কার্ড ব্যবহারের সময় থেকে টাকা ফেরত দিতে হলে তার পরিমাণ দাঁড়াবে বিপুল অঙ্কে। আমজনতার মধ্যে আসন্ন ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে ভীতি ও ক্ষোভের সঞ্চার তৈরি হয়েছে। আতঙ্কের বশেই সরকারের কাছেই রেশন কার্ড সমর্পন করে দিতে চাইছেন গ্রাহকরা। এই কাণ্ডের জেরে গত এক সপ্তাহে জমা পড়েছে এক লক্ষ কার্ড।

এই প্রসঙ্গে বাংলার খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ যোগী সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। তাঁর কথায়, এটা কোনও সরকারের নীতি হতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলায় ছয় কোটি দুই লক্ষ গ্রাহক এনএফএসএ-র আওতায় রেশন পান। বাকি চার কোটি রাজ্যবাসীকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিনামূল্যে রেশন দেন। স্পষ্টত উত্তরপ্রদেশ সরকার নির্বাচনের মুখে যে ভোট সর্বস্ব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা আর তারা রাখল না। রথীন ঘোষের সাফ প্রশ্ন কোন প্রক্রিয়ায় কার্ডগুলোকে যাচাই করা হচ্ছে?। তাঁর কথায় এখানেই বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের ফারাক। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর ওখানে যোগী।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের জনসংখ্যা প্রায় ২৩ কোটি। তার মধ্যে রেশন গ্রাহকের সংখ্যা ১৫ কোটি। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন বা এনএফএসএ’র আওতাভুক্ত গ্রাহকরা রেশনে চাল আর গম পান। বাংলার মতোই সে রাজ্যেও সরকার কার্ডহীন কোনও ব্যক্তিকে কিছু দেয় না। কার্ডপিছু যোগীরাজ্য প্রতি মাসে ১৫ কিলো চাল ও ২০ কিলো গম দেওয়া হয়। পিএইচএইচ কার্ডে একটি পরিবারে মাথাপিছু মেলে তিন কিলো গম আর দুই কিলো চাল। কখনও পাম তেলও মেলে। সে রাজ্যে ভোটের মুখে তিন মাসের জন্য এক কিলো করে ছোলা আর নুন দেওয়া হয়েছিল। ভোট মিটতে সে সবকিছুই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে আতঙ্কের নির্দেশ!​

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Uttar Pradesh, #yogi adityanath, #ration card

আরো দেখুন